নিখোঁজ হওয়া রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশিত: ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০১৮

একুশ ডেস্ক : রংপুর জেলা জজ আদালতের বিশেষ পিপি ও আওয়ামী নেতা অ্যাডভোকেট রথীয় চন্দ্র ভৌমিকের মরদেহ জেলার তাজহাট মোল্লা পাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব ১৩’র ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আরমিন রাব্বি। নিহতের স্ত্রী স্নিগ্ধা রাণী ভৌমিক ও মেয়ে অদিতি ভৌমিকসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।

এর আগে রংপুরের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক (বাবু সোনা) নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারের উদ্যোগে মঙ্গলবার দিনভর বাড়ির পাশে একটি ডোবায় তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে একটি রক্তমাখা শার্ট পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। শার্ট পাওয়ার ঘটনায় বিষয়টি ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে বলে পুলিশের ধারণা। শার্টটি এখন পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। নতুন করে পুলিশ আরও দুজনকে অটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ নিয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন ছয়জন। শার্টটি এখন মাহিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক শাহ আলমের হেফাজতে রয়েছে বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার নিখোঁজ আইনজীবীর সন্ধানে পরিবারের পক্ষ থেকে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাবুপাড়ায় নিজ বাড়ির পেছনে একটি ডোবায় তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় পুলিশ-র্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ডোবায় তল্লাশি চালানোর সময় সেখানে একটি রক্তমাখা শার্ট পাওয়া যায়। ওই শার্ট পাওয়ার পর পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম নতুন মাত্রায় ভিন্ন দিকে মোড় নিয়েছে। ওই রক্তমাখা শার্টের মধ্যে নিখোঁজ আইজীবীর কোনো সম্পর্ক আছে কিনা এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।


রংপুরে রথীস চন্দ্র ভৌমিকের নিখোঁজের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ : ফাইল ছবি

তবে রক্তমাখা শার্ট সম্পর্কে রথীশ চন্দ্রের ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক সুবল বলেন, যে শার্টটি ডোবায় পাওয়া গেছে তাতে রক্ত সাদৃশ্য দাগ দেখা গেলেও শার্টটি তার নিখোঁজ দাদা রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের নয়।

রংপুর পুলিশের এএসপি (সার্কেল-১) সাইফুর রহমান সাইফ বলেন, ডোবায় তল্লাশির সময় যে শার্টটি পাওয়া গেছে সেখানে রক্তের মতো দাগ রয়েছে। কাদাপানিতে দাগটি ঠিক স্পষ্ট নয়। তাই শার্টের ‘ফরেনসিক’ পরীক্ষার পর বোঝা যাবে শার্টটি কার এবং ওই দাগ রক্তের কি না।

তিনি আরো জানান, ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে এমন সন্দেহে তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষককে মঙ্গলবার আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নিখোঁজ ঘটনায় কোনো ক্লু পাওয়া যায় কিনা তা দেখা হচ্ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলাটির তদন্তে নেমেছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক দল। তবে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে নিখোঁজের ঘটনায় তদন্ত অগ্রগতি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে বলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।

নতুন করে আটককৃতরা হলেন তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিয়ার রহমান ও কামরুল ইসলাম। আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। আটককৃতরা হলেন, তার সহকর্মী ও পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ। এর মধ্যে কামরুল ইসলামের সঙ্গে অতি ঘনিষ্ঠতা নিয়ে পারিবারিক বিরোধ ছিল এবং এ নিয়ে প্রায় মারধরের ঘটনাও ঘটত বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। তাই পুলিশের সন্দেহের তীর এখন তার দিকে।

/এস আর

Comments