প্রিয়া সাহাকে এয়ারপোর্টে আটকে দেওয়ার আহ্বান মুফতী ফয়জুল করীমের

প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০১৯

ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা প্রিয়া সাহার বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার আহবান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম ।

তিনি বলেন, দেশ্রদ্রোহী ও চরম সাম্প্রদায়িক আচরণ করা এদেশের রাষ্ট্রদ্রোহীদের অনুচর প্রিয়া সাহাকে বাংলাদেশের জমিনে পা দিতে দেওয়া হবে না।

১৯ জুলাই (শুক্রবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, হিন্দু ধর্মের অনুসারী প্রিয়া সাহা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশ্ব মোড়ল ও ইসলাম বিদ্ধেষী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ করেছেন। তার মতো একজন দেশবিরোধী দেশে প্রবেশের অধিকার রাখে না। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন্য করে এই নারী বাংলাদেশে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। তাই আমেরিকা থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে তাকে আটকে দেওয়া উচিত।

বিবৃতিতে, দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক পদে চাকরিত প্রিয়া সাহার স্বামী মলয় সাহাকেও স্ত্রীর রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে সহযোগিতার দায়ে আগামী কর্মদিবসের আগে তার পদ থেকে বহিস্কারেরও দাবি তুলেছেন জানান মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম।

তিনি বলেন, প্রিয়া সাহা দেশের খেয়ে দেশের পড়ে দেশবিরোধী এমন মিথ্যা অভিযোগ কেন দিলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাকে সঠিক বিচারের আওতায় না আনা হলে দেশে কঠোর আন্দোলন করা হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারন করেন।

তিনি আরও বলেন, এই নারী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যা বলেছেন তা তার একার বক্তব্য নয় বরং এ দেশের রাষ্ট্রবিরোধী কিছু দালাল ও দোসরদের শেখানো বক্তব্য সে মুখপাত্র হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বলেছেন। তাই যারা তাকে পরিকল্পিতভাবে আমেরিকায় পাঠিয়েছে এবং দেশবিরোধী বক্তব্য দিতে বলেছে তাদেরকে খুজে বের করে অতি-শীগ্রই আইনের আওতায় না আনা হলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

উল্লেখ্য, ধর্মের নামে অত্যাচারিত হয়েছেন এমন বিভিন্ন দেশের মানুষদের নিয়ে তৈরি একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বুধবার নিজের ওভাল অফিসে দেখা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে বিভিন্ন দেশে নিপীড়নের শিকার হওয়া লোকজনের পক্ষে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

সেখানে বাংলাদেশি পরিচয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের কাছে দেশের মুসলিম সমাজ ও সরকারের নামে নালিশ করে।

ওই সাক্ষাতে প্রিয়া সাহা ট্রাম্পকে বলেন, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ রয়েছেন। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশেই থাকতে চাই।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই নারী ট্রাম্পকে বলছেন, এখনও সেখানে (বাংলাদেশে) ১ কোটি ৮০ লাখ সংখ্যালঘু রয়েছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। সেখানে আমি আমার ঘরবাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমিজমাও দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এর কোন বিচার হয়নি।

ওই নারীর এমন বক্তব্যের পর ট্রাম্প বলেন, কারা জমি দখল করেছে, কারা ঘরবাড়ি দখল করেছে? তখন ওই নারী মুসলিমদের নামে বিষদগার করে বলেন, মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন। তারা সবসময় রাজনৈতিক আশ্রয় পায়। সবসময়।

এদিকে, প্রিয়া সাহার বক্তব্য ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ভাবমূর্তি নষ্টের কারণ’ বলে মনে করছেন সচেতন মহল। সামাজিক মাধ্যমে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, এটা দেখি ঘষেটি বেগম। অপর একজন লিখেছেন, এটা কাদের চাল হতে পারে বুঝলাম না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা যে নালিশ করেছে তা চক্রান্তের অংশ ছাড়া আর কিছু নয়।

বাংলাদেশ নিয়ে প্রিয়া সাহার ‘মিথ্যা অভিযোগে’র তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি জানান, প্রিয়া সাহা কেন এমনটি করলেন তা খতিয়ে দেখা হবে। শুক্রবার নিজের ফেসবুক পেজে প্রতিমন্ত্রী এই কথা বলেন।

এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এক বাংলাদেশি সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছেন তা সঠিক বলে মনে করেন না ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় একে অপরকে শ্রদ্ধা করে।

,

 

 

Comments