খুলনায় নিরাপদ সড়ক চাই ‘র সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০১৮

শেখ নাসির উদ্দিন,খুলনা প্রতিনিধিঃখুলনা বিভাগের বিগত ৩ (জানুয়ারী-মার্চ) মাসের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক দুর্ঘটনারোধে করনীয় বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা জেলা শাখার উদ্যোগে খুলনা প্রেসক্লাব এর শহিদ হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে (৩ এপ্রিল) মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন নিসচা’র খুলনা জেলা শাখার উপদেষ্টা ও সদর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. মো: সাইফুল ইসলাম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিআরটিএ – এর খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো: জিয়াউর রহমান এবং নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)’র কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ও খুলনা জেলা সাধারন সম্পাদক এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ব্যবসায়ী নেতা শামসুদ্দিন আহমেদ সাম, নিসচা’র জেলা সভাপতি মো: হাছিবুর রহমান হাছিব, খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব এ্যাড. মো: বাবুল হাওলাদার, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের চেয়ারম্যান শেখ মো: নাসির উদ্দিন, নিসচা’র জেলা সহ-সভাপতি মো: সেলিম খান,মো: মনোয়ার হোসেন লাভলু, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএমএ রহিম, হোসাইন মো: ইউছা ওয়ায়েজ আররাফী নাজু,আফজাল হোসেন রাজু, দুর্ঘটনা অনুসন্ধান বিষয়ক সম্পাদক মো: সাইফুল ইসলাম, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শিক্ষক জিএম মহিউদ্দিন, সদস্য মো: মাসুদ রানা প্রমুখ।

সমম্মেলনে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে বিগত ২ যুগ ধরে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) দেশের সড়ক নিরাপত্তার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে এ বছর সরকারের পক্ষ থেকে সমাজ সেবায় অবদান রাখায় একুশে পদকে ভূষিত করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়।

বর্তমানে সারা দেশে বিভিন্ন কারনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সড়ক দুর্ঘটনা সব সময়েই আমাদের দেশে একটি বড় ধরনের সামাজিক সমস্যা। আমরা আজ আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি খুলনা বিভাগের বিগত ৩ (জানুয়ারী-মার্চ) মাসের সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক দুর্ঘটনারোধে করনীয় বিষয়ে প্রথমেই তুলে ধরছি গত ৩ মাসের সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান। যেখানে আমরা সড়কে নিহত-আহতদের সংখ্যা আপনাদের জানাতে চাই।

চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে খুলনা মহানগর জেলা এবং বিভাগে শতাধিক সড়ক দূঘটনা ঘটেছে। এসব দূঘটনায় নিহত হয়েছে প্রায় অর্ধশত। নিহতদের মধ্য নারী শিশু ও বৃদ্ধার সংখ্যা বেশি। চলতি বছরের দুই মাসে নিহতর সংখ্যা ৩৭ জন। যার মধ্য শুধু জানুয়ারিতে নিহত হয় ১৫ জন যার মধ্য নগরীতে ১ জন,জেলায় ২ জন ও বিভাগে ১২ জন এবং ফ্রেব্রুয়ারি মাসে নিহত হয় ২২ জন যার মধ্য নগরীতে ৩ জন,জেলায় ১ জন ও বিভাগে ১৮ জন। এসব দূঘটনার জন্য প্রধানত দায়ী ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা ও অতিরিক্ত ইজিবাইক এবং চলকদের স্বেচ্ছাচারিতা। গত ৩ মাসে এই বিভাগে মোট ৬৯ জন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ২শ ৩৭জন। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে সাতক্ষিরা এবং যশোরে গত তিন মাসে বেশি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে বিগত ৪ বছরের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয় যার মধ্যে ২০১৪ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৭১৩টি এতে নিহত হয়েছে ৪৫৩৬জন, আহত হয়েছে ১০৭৭০জন। ২০১৫ সালে সারা দেশে ২৬২৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে এতে নিহত হয়েছে ৫০০৩ জন, আহত ৬১৯৭জন। ২০১৬ সালে ২৩১৬ দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৪৪জন, আহত ৫২২৫জন। ২০১৭ সালে ৩৩৪৯টি দুর্ঘটনায় নিহত ৫৬৪৫জন আহত ৭৯০৮জন। (সূত্র নিসচা কেন্দ্রিয় কমিটি)

যে সকল কারনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, এক্ষেত্রে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়- প্রতিটি দুর্ঘটনার পিছনে এক বা একাধিক কারন থাকে। সাধারনত যে সকল কারনে আমাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বা দেশ ব্যাপী দুর্ঘটনা ঘটার অন্যতম কারন- চালকদের কারনে; তারা ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মানে না, অতিদ্রুত বা বেগরোয়া গতিতে গাড়ী চালায়, প্রতিযোগিতা করে, বিপদজনকভাবে ওভারটেক করে, চালকের পরিবর্তে হেলপার দিয়ে গাড়ী চালায়, প্রয়োজনীয় বিশ্রাম না নিয়ে অবসাদগ্রস্থ অবস্থায় একটানা গাড়ী চালায়, গাড়ী চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলে, শিক্ষার স্বল্পতা, অপর্যাপ্ত ট্রেনিং ও অনভিজ্ঞতা, নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গাড়ী চালায়। পথচারীর কারনে; অসর্তকভাবে ও অমনযোগি হয়ে রাস্তায় চলা।

সড়ক দুর্ঘটনারোধে কিছু সুপারিশ: ক) সড়কের উন্নয়ন করতে হবে। খ) যানবাহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। গ) শিক্ষা প্রশিক্ষণ এবং প্রচার করতে হবে। ঘ) যুগোপযোগি আইন প্রণয়ণ ও এর কাযকারী প্রয়োগ করতে হবে। ঙ) জরুরী সেবা চালু করতে হবে। চ) ট্রাফিক আইন অনুসরন করতে হবে।

Comments