সিরিজ জিতল শ্রীলঙ্কা, ব্যর্থ তামিমের বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০১৯

দুই’য়ে দুই!

টানা দুই ম্যাচ জিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিলো শ্রীলঙ্কা। দুই ম্যাচেই প্রায় সমান দাপট স্বাগতিকদের। প্রথম ম্যাচ জিতেছিলো তারা ৯১ রানে। কলম্বোতে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলো ৭ উইকেটে। তখনো ম্যাচের ৩২ বল বাকি। দুই ম্যাচে হারের এই ব্যবধানই জানাচ্ছে লড়াই তো দুরের কথা, ম্যাচে দাড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ।

৩১ জুলাই সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডে এখন নেহাৎ আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচ হয়ে গেলো।

সিরিজ বাঁচাতে হলে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকেই জিততেই হতো। কিন্তু জেতার মতো ব্যাটিংই যে করতে পারলো না দল। ২৩৮ রানের মামুলি পুঁজি নিয়ে প্রেমাদাসার উইকেটে ম্যাচ জেতা যায় না। লড়াই জমিয়ে তোলার মতোও সঞ্চয়ও না এটা।

এই ম্যাচের উইকেটে স্পিন একটু ধরছিলো বটে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার শুরুর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই তাদের ম্যাচ জয়ের কাজটা আরো সহজ করে দেয়। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে শ্রীলঙ্কা কোন উইকেট না হারিয়ে ৬৯ রান তুলে নেয়। আর বাংলাদেশ তাদের স্কোরবোর্ডে ৬৮ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলেছিলো ৪ উইকেট।

দু’দলের ব্যাটিংয়ের শুরুর এই উল্টো চিত্রই ম্যাচের হিসেব চুকিয়ে দেয়।

ব্যাটিং-বোলিংয়ে বাংলাদেশের বাজে শুরু-এই ম্যাচেও রইলো। সামগ্রিক সেই ব্যর্থতার নিয়ম মেনেই যেন এই ম্যাচেও ক্যাচ ফস্কালো!

কম স্কোরের ম্যাচ জিততে হলে ক্রিকেটারদের শারীরিক ভাষায় যে তেজ থাকার প্রয়োজন তার ছিঁটেফোঁটাও মিললো না। কোমরে হাত। দুঃখী দুঃখী ভাব। অধিনায়ক তামিমকে দেখে মনে হলো যেন শোকসভায় যোগ দিয়েছেন তিনি! কখনো গালে হাত। কখনো হাতের পাঞ্জা দিয়ে মুখ ঢাকছেন! হতাশার ব্যাপকতা এতো বেশি যে পুরো দলকে দেখে মনে হচ্ছিলো খেলতে নয়, মাতম করতে নেমেছে এই একাদশ!

এমন দৃষ্টিভঙ্গি কখনো ক্রিকেট ম্যাচ জেতায় না। বাংলাদেশও জেতেনি। লড়তেও পারেনি!

টসে জিতে প্রেমাদাসার উইকেটে আগে ব্যাট করার সুযোগ ঠিকই পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু আরেকবার ধারাবাহিকভাবে সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল ব্যর্থ হলেন। ওয়ান ডাউনে মোহাম্মদ মিথুন যে কায়দায় সহজে ক্যাচ তুলে ফিরলেন তাতে সিরিজের শেষ ম্যাচে তার জায়গায় টিম ম্যানেজমেন্টকে বিকল্প কোনো চিন্তা করতেই হচ্ছে। মিডলঅর্ডারে মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির ও মোসাদ্দেক আরেকবার ব্যর্থ ব্যাটসম্যান। মুশফিক রহিম একপ্রান্ত আঁকড়ে রেখে যে জেদ ও দক্ষতা দেখিয়ে ব্যাট করে গেলেন-সেটা দলের বাকিদের জন্য বড় শিক্ষা।

দল সংকটে পড়লে কিভাবে নিজের খেলা বদলে ফেলে পরিস্থিতির সঙ্গে এগিয়ে চলতে হয়- তারই উদাহরণ ছিলো মুশফিকের অপরাজিত ৯৮ রান। ২ রানের জন্য নিজের অষ্টম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পাননি মুশফিক। কিন্তু তার ১১০ বলে ৬ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কার হার না মানা ৯৮ রানের ইনিংস আরেকবার জানান দিলো এখনো এই দলের ‘ক্রাইসিস ম্যান’ তিনিই। মিডলঅর্ডারে মুশফিক এবং আট নম্বরে ব্যাট করতে নামা মেহেদি হাসান মিরাজের কার্যকর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ কোনো মতো দুশো’র ওপরে পৌছালো।

টানা দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ তামিম ইকবাল এই ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে ‘পাস মার্ক’ পাওয়ার মতো পারফরমেন্স দেখাতে পারেননি! দল ভালো করছে না। অধিনায়কও ভালো করতে পারছেন না।

সিরিজ হারা বাংলাদেশ দলকে ভীষণ সমস্যাসঙ্কুল মনে হচ্ছে!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ২৩৮/৮ (৫০ ওভারে, তামিম ১৯, সৌম্য ১১, মিথুন ১২, মুশফিক ৯৮*, মাহমুদউল্লাহ ৬, সাব্বির ১১, মোসাদ্দেক ১৩, মেহেদি ৪৩, তাইজুল ৩, মুস্তাফিজুর ২*, অতিরিক্ত ২০, প্রদীপ ২/৫৩, উদানা ২/৫৮, ধনাঞ্জয়া ২/৩৯)। শ্রীলঙ্কা: ২৪২/৩ (৪৪.৪ ওভারে, আবিস্কা ৮২, গুনারত্নে ১৫, কুশাল পেরেইরা ৩০, কুশাল মেন্ডিস ৪১*, ম্যাথুস ৫২*, মেহেদি ১/৫১, মুস্তাফিজ ২/৫০)। ফল: শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে জয়ী।

Comments