মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ

মাহমুদুল্লাহ’র বিশ্বকাপে ফেরা

প্রকাশিত: ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩

লকি ফার্গুসনের বলটিতে ব্যাট ছুঁইয়ে কাভারের দিকে ঠেলে প্রায় হেঁটেই এক রান নিলেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর নন স্ট্রাইক প্রান্তে গিয়ে দাঁড়িয়ে হয়তো রানের খাতা খোলার স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ (মঙ্গলবার) সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ওই রানটা দিয়েই ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কীর্তি গড়েন মাহমুদউল্লাহ, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বড় অর্জনই বলা যায়। কিন্তু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দুটি জায়ান্ট স্ক্রিনে কোনো অভিনন্দন বার্তা দেখা গেল না।

মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারটাও অবশ্য এমনই। প্রচারের আলো তাঁকে সহজে খুঁজে পায় না বললেই চলে। তিনিও সব সময় আড়াল খুঁজেই চলেন। বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ দলেও তিনি জায়গা করে নিলেন নীরবে। তামিম ইকবালের থাকা না–থাকা নিয়ে যখন চারদিকে এত হইচই, তখন বাংলাদেশ দলের সেরা ১৫-তে জায়গা করে নিলেন মাহমুদউল্লাহ। ভারতের মাটিতে ৩৭ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তাঁর ক্যারিয়ারের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলবেন।

দলে ফেরার জন্য মাহমুদউল্লাহকে বিশেষ কিছু করতে হয়েছে, তা কিন্তু নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলের বিপদে ৭৬ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলেছেন। আজ সিরিজের শেষ ম্যাচে করেছেন ২৭ বলে ২১। বিশ্বকাপের সেরা ১৫-তে ঢুকতে এটুকুই যথেষ্ট ছিল।

ফেসবুক ও ওয়েবসাইটে দল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মলেন বিসিবির নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন, পাশেই হাবিবুল বাশার (বাঁয়ে) ও আবদুর রাজ্জাক (ডানে)।

বাকিদের পারফরম্যান্সও আরও একটা কারণ। লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলা বাকিদের পারফরম্যান্সও মাহমুদউল্লাহর বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার পথটা মসৃণ করে দিয়েছে।

আজ দল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনও বলেছেন, ‘আগেই বলেছিলাম, বিশ্বকাপের আগে যেকোনো খেলোয়াড়কে যেকোনো সিরিজে দেখব। ও পরিকল্পনাতেই ছিল। নিউজিল্যান্ড সিরিজে দেখেছি।’

বিশ্বকাপে ফিরছেন মাহমুদুল্লাহ, নেই তামিম

নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে মাহমুদউল্লাহ সর্বশেষ বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন গত মার্চে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ব্যাটিং অর্ডারের ছয় নম্বর পজিশনে এরপর খেলানো হয়েছে মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসানকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ ম্যাচ খেলে ৯ ইনিংসে ব্যাট করে মুশফিক করেছেন ৪৩৩ রান, একটি সেঞ্চুরি ও তিনটি ফিফটি ছিল এর মধ্যে। মুশফিক এ সময় ৬১.৮৫ গড় ও ৯৯.৫৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন। ৩ ম্যাচ খেলে হৃদয়ও দুই ইনিংসে দুটি ফিফটির সৌজন্যে করেছেন ১৩৬ রান। এক ইনিংস খেলে সাকিব করেছেন ৩২ রান।

পরিসংখ্যানই বলছে, মাহমুদউল্লাহর অনুপস্থিতিতে মুশফিক ছয় নম্বরের জায়গাটা নিজের করে নিয়েছেন। ওদিকে ব্যাটিং অর্ডারের সাত নম্বর পজিশন থেকে ধারাবাহিকভাবে রান পাচ্ছিল না বাংলাদেশ। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর সবচেয়ে বেশিবার এই পজিশন খেলা আফিফ হোসেন রানে নেই। এশিয়া কাপে আফিফের বিকল্প হিসেবে যাকে আনা হয়, সেই শামীম হোসেনও ধারাবাহিক নন। তাই বিশ্বকাপের আগে নির্বাচকেরা ফিরে যান মাহমুদউল্লাহর অভিজ্ঞতায়।

শেষ পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহর এই অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে কী এনে দেয়, সেটাই দেখার অপেক্ষা। প্রথম আলোর সৌজন্যে।

Comments