বান্দরবানে পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০১৯

নুসিং থোয়াই মারমা, বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানে পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে সাত রঙ্গিন-সাজ রব। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছর বরণকে সামনে রেখে প্রত্যন্ত পাহাড়ি পল্লীগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। হাট-বাজারগুলোতে বসেছে কেনা-কাটার জমজমাট আসর।

বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলায় প্রতিটি জনপদ এখন উৎসবের জোয়ারে ভাসছে। বান্দরবান জেলায় প্রধান অতিথি থেকে বৈসাবি উৎসবের পানি বর্ষণ, মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বর্ষবরণ ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করবেন পার্বত্যমন্ত্রী জনাব বীর বাহাদুর উশৈসিং।

আগামী ১৩ এপ্রিল বর্ণাঢ্য র্যালি শোভাযাত্রা সহ নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে মূল উৎসব শুরু হবে। ১৪ এপ্রিল রোববার পাহাড়িদের গ্রামে-গ্রামে ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ স্নান, পিঠা উৎসব।

১৫ এপ্রিল মৈত্রী পানি খেলা উৎসব, আলোচিত্রী প্রদর্শনী নানা খেলা-ধুলা ও ১৬ এপ্রিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। অনুষ্ঠানের স্থানীয় মারমা শিল্পীগোষ্ঠী মঞ্চ মাতাবেন।

বাজারগুলোতে বৈসাবি কেনাকাটায় সাজ-সাজ রব

এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান পর্যাক্রমে আনন্দ র্যালি, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী পানি উৎসব ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় গড়িয়া নৃত্য’র আয়োজন করার কথা রয়েছে।আয়োজক ও জনপ্রতিনিধিদের মতে বান্দরবানে এবার উৎসব রঙ্গিন মখুর পরিবেশে বৈসাবি উৎসব পালিত হবে।

বান্দরবানে দীর্ঘ যুগ ধরে বসবাসরত পাহাড়ি তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘ত্রিপুরা ভাষায় বৈসুক, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে।

এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা ছাড়াও বান্দরবান জেলায় তঞ্চঙ্গ্যা, বম, খিয়াং, লুসাই, পাংখোয়া, ম্রো, খুমি, আসাম, চাক ও রাখাইনসহ অন্যান্য সম্প্রদায়রাও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ও অবস্থানকে বৈচিত্রময় করে তুলতে প্রতি বছর চৈত্রের শেষ দিন থেকে ‘বৈসাবি’ উৎসব পালন করে থাকে।

বান্দরবান জেলার উৎসব উদযাপন পরিষদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মি. কোকো চিং মারমা একুশনিউজ২৪ ডটকম প্রতিবেদককে জানান, ১৩ এপ্রিল বর্ণাঢ্য র্যালির মধ্য দিয়ে পুরাতন বছর বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হবে।

তিনি বলেন, বৈসাবি উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি-বাঙ্গালীর মধ্যে শান্তি-সম্প্রীতি ও ঐক্য আরও সু-দৃঢ় হোক এই প্রত্যাশা সকলের।

/আরএ

Comments