ভৈরবে শিক্ষার্থীকে মদ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা; সত্যতা পাওয়ায় দুই এসআই প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ৭:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০১৯

ভৈরব প্রতিনিধি: ভৈরবে এক শিক্ষার্থীকে মদ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- ভৈরব থানার এসআই আবুল খায়ের ও আজিজুল হক। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাদা পোশাকে চেকপোস্ট বসানো এবং মাদকের সিজার লিস্ট না করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তদন্তকারী কর্মকর্তারা অভিযোগকারী ছাত্র সজিবের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। তারা সজিবের বক্তব্য নিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্থানীয় লোকজন জানায়, ভৈরবের শম্ভুপুর পাক্কারমাথা এলাকার সাব মিয়ার ছেলে ভৈরব সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সজিব গত শনিবার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ভৈরব বাজারে যান ঈদের কেনাকাটা করতে। সেখান থেকে ফেরার পথে চান্দভান্ডার দরবার শরীফের সামনে সাদা পোশাকে পুলিশের দুইজন সদস্য সজিবকে আটক করে।

এ সময় তারা সজিবের গায়ে মদ ঢেলে দিয়ে তাকে মাদক ব্যবসায়ী সাজানোর চেষ্টা করে বলে সজিবের অভিযোগ। সজিব কৌশলে সেখান থেকে সটকে পড়ে পাক্কার মাথা এলাকায় চলে যান। পুলিশ সদস্যরাও তার পিছু নেয়। পরে সজিবকে জোর করে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয় লোকজন গিয়ে সাদা পোশাকধারী দুজনকে ধরে পিটুনি দেয়। এক পর্যায়ে এসআই আজিজুল হক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

খবর পেয়ে ভৈরব থানার এসআই মোখলেছুর রহমান রাসেল ও অভিজিৎসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য গিয়ে আবুল খায়েরকে উদ্ধার করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তারা হলেন, মোহাম্মদ আলী, মিজান মিয়া, ইয়াকুব ও রহিম মিয়া। এরপর রোববার ভোরে সজিবের বাবা সাব মিয়াকেও আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ‘ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে’ মর্মে থানায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয় বলে জানা যায়। মীমাংসার পর আটক পাঁচজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশনের পর অবগত হয়ে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ সোমবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মিজানুর রহমানকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেন। তদন্ত কমিটি ঐদিনই সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে পুলিশের দুই সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায় বলে জানা যায়।

এমএম/

Comments