বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি, জেলে নিখোঁজ

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮

ডেস্ক: বাগেরহাটের শরণখোলার বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এসব ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগর থেকে ঝড়ো হাওয়ায় ভারতীয় জলসীমার রায়দিঘী এলাকায় ঢুকে পড়া এফবি মারিয়া-১ নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। ট্রলারটিতে ১৭ জন জেলে ছিলেন। এদের মধ্যে ১৫ জনকে উদ্ধার করেছে একটি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার। এখনো ট্রলারটির দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কূলে ফেরার সময় উত্তাল বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হা্ওয়ার টানে ভারতীয় জলসীমার রায়দিঘী এলাকায় চলে যায় ট্রলারটি। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ট্রলারটি ডুবে যায় সেখানে।

এদিকে, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের মান্দারবাড়িয়া ও ১ নম্বর ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় আরো ছয়টি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে, ট্রলারগুলো এবং জেলেদের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। এ ছাড়া, শরণখোলায় আরো পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলার নিখোঁজ রয়েছে। মৎস্যজীবী নেতা, মাছ ব্যবসায়ী এবং জেলেরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর অশান্ত হয়ে ওঠায় সমস্ত মাছ ধরার ট্রলার কূলে ফিরে এসেছে। শত শত ট্রলার পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মঠবাড়িয়া, পাড়েরহাট, বাগেরহাট, মোংলা, রামপাল, খুলনা ও সাতক্ষীরা এলাকার সহস্রাধিক ট্রলার সুন্দরবনের ভেদাখালী, কচিখালী, হিরণপয়েন্ট, দুবলার চর, আলোর কোল, নারকেলবাড়িয়া এলাকায় নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। বনবিভাগ সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, নিম্নচাপের সংকেত পেয়ে সাগরে মাছ ধরা অবস্থায় সকল ট্রলার বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই কূলে ফিরতে শুরু করে। এ সময় শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর গ্রামের শহিদুল ফরাজী এফবি মারিয়া-১ নামের ট্রলারটি ভারতীয় উপকূলের কাছাকাছি রায়দিঘী এলাকায় ডুবে যায়।

এ সময় কাছাকাছি অবস্থানরত ভারতীয় একটি ট্রলার ১৫ জেলেকে উদ্ধার করে। ভারতীয় ট্রলারটি থেকে রবীন বাবু নামের এক ব্যক্তি আজ শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে মোবাইল ফোনে পিরোজপুরের পাড়েরহাটের মৎস্য আড়ৎদার কমল বাবুকে এসব তথ্য জানালে তিনি শরণখোলার ব্যবসায়ীদেরকে তা জানান।

শরণখোলার মাছ ব্যবসায়ী এম সাইফুল ইসলাম খোকন, কবির আড়ৎদার ও জামাল হাওলাদার জানান, বৃহস্পতিবার সাগর থেকে ফেরার পথে মৎস্য ব্যবসায়ী তহিদুল তালুকদারের এফবি আজমীর শরীফ-১, বিলাশ রায় কালুর এফবি সাগর-১, মালেক মোল্লার এফবি শাওন এবং ইউনুস শিকদারের ট্রলারসহ চারটি ট্রলারের কোনো সন্ধান পাওয়ো যাচ্ছে না।

দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল আহমেদ মোবাইল ফোনে জানান, দুবলার চরের কাছাকাছি মান্দারবাড়িয়া ও ১ নম্বর ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় ছয়টি ট্রলার ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ট্রলারগুলো কোন এলাকার এবং ট্রলারে থাকা জেলেদের পরিণতি কী হয়েছে- তা জানাতে পারেননি তিনি।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, দুর্যোগে সাগর ছেড়ে সহস্রাধিক ট্রলার সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। সংশ্লিষ্ট স্টেশন ও ক্যাম্পের দায়িত্বরত বনরক্ষীদের বলা হয়েছে আশ্রিত ট্রলার ও জেলেদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। খবর ইত্তেফাক।

/এমএম

Comments