তাহিরপুরে মানব নামের দানবচক্র দ্বারা বোমা মেশিনের তান্ডব থামছে না

প্রকাশিত: ৯:৫৫ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০১৯

মহিবুর রেজা টুনু,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর লাউড়েরগড় এলাকায় অবৈধভাবে দেড় শতাধিক ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের পর পরই আইন অমান্য করে আবারো শুরু হয়েছে বালু উত্তোলনের মহোৎসব।

শনিবার ভোর থেকে দেড় শতাধিক বোমা ও ড্রেজার মেশিন নিয়ে লাউড়েরগড় এলাকার দুদু বালুচর এ স্থানীয় লাউড়ের গড় গ্রামের মৃত গোলাম কিইরয়ার ছেলে মোঃ শাহজানা মিয়া, মৃত আবুল কাশেমের ছেলে খাজা মইনুদ্দিন, মৃত জাহিদ মিয়ার ছেলে মোঃ শাহজাহান, পুরান লাউড়ের গড় গ্রামের পালই মিয়ার ছেলে আক্কাছ মিয়া, লোহাজুড়ি ছড়ারপাড় গ্রামের মৃত রহম আলণীর ছেলে মোস্তফা মেম্বার, ভাই হেলাল উদ্দি,রমিজ আলী গংদের নেতৃত্বে চলছে পরিবেশ দূষনকারী বিধবংসী ড্রেমার ও বোমা মেশিন দিয়ে বালু ও পাথুর উত্তোলন।

এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও অনলাইন পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশের পরও বন্ধ হচ্ছে না অবৈধভাবে চালানো মানব নামের দানবদের বোমা মেশিন।

কে ওরা এই দুৃষ্টচক্র অর্থ পিপাসু তারা কি সকল আইন কানুনের উধের্ব যাদের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তরফ বার বার নিষেধাজ্ঞার পাশপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং আর্থিক জরিমানা করেও তাদের নিভৃত করা যাচ্ছে না।

ঐ সমস্ত মানব নামের দানবদের পেছনে কোন অদৃশ্য শক্তি জব্বদল পাথরের মতো চেপে বসেছে যারা কোটিপতি বনার স্বপ্নে বিভোর হয়ে মেতে উঠেছে অপার সম্ভাবনা সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি রুপেন রানী যাদুকাটাকে ধবংস করতে।

এদিকে প্রশাসন দিনে অভিযান পরিচালনা করলেও ঐ চক্রটি কৌশল বদল করে দিনের পরিবর্তে রাতে চালু করলেও আজকের আবারো প্রকাশ্যে দিবালোকে প্রশাসনের নাকের ডগায় দেড় শতাধিক ড্রেজার ও বোমা মেশিন লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বেশ কয়েক লাখ টাকার বালু ও পাথর।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, এভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে না পরিবেশ ধবংসকারী বোমা ও ড্রেজার মেশিনের উৎপাত। তাই এই চির সবুজের সৌন্দর্য্যের অপার লীলাভূমি রুপের রানী যাদুকাটাকে বাচাঁতে সরকারের দায়িত্বশীলদের পাশাপাশি প্রশাসনের উধর্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান।

উল্লেখ্য, তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী লাউড়েরগড় এলাকার বিশাল দু দু বালুচরের পুরো জায়গাটুকু দখল করে বোমা ও ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে দিশেহারা স্থানীয় জনসাধারন। এই বিষয়ে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখতে জেলা প্রশাসনের কড়া নির্দেশ থাকলেও উপজেলা প্রশাসনের উদাসীনতা লোক দেখানো অভিযানে বন্ধ হচ্ছে না বালু ও পাথর উত্তোলন।

এদিকে বিকেলে তাহিরপুরের ফাজিলপুর এলাকার আনোায়ারপুর ব্রীজের উজান দিকে রয়েলিটি পরিশোধ করে রয়েলিটি ঘাট থেকে জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের লম্বাবাক গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে মোঃ মন্নান মিয়া তার ৬ হাজার ফুটের ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন বালু বোঝাই করে এই মালামাল নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্তি যাওয়ার প্রস্তুতিকালে রয়েলিটি ঘাটে আসামাত্র ফাজিলপুরের ইজারাদার বালিজুরী ইউনিয়নের ফাজিলপুর গ্রামের রাজাহাসের ছেলে মোঃ কাশেম মিয়ার লোকজন।

ঐ বলগেট বালু বোঝাই নৌকাটি আটক করে ৩ হাজার টাকা ঢোল বাবত নির্ধারিত ৩ শত টাকার পরিবর্তে ৩ হাজার টাকা চাদাঁ দাবী করেন। এই বলগেট মালিক এত টাকা চাদাঁ দিতে অস্বীকৃতি জানানে কাশেম মিয়ার নেতৃত্বে ১০/১২ জন মিলে তাকে ৩ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করে। তা না হলে নৌকা আটক রেখে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করার হুমকি দিলে তিনি প্রাণের ভয়ে এক হাজার টাকা চাদা দিয়ে মুক্তি নেন বলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান।

এ ব্যাপারে মোঃ শাহজাহন মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা সহকারি ভূমি কমিশনার(এ্যাসিল্যান্ড) মনতাসির হাসান জানান আগামীতে আরো শক্ত অবস্থানে গিয়ে ঐ সমস্ত অবৈধ ড্রেজার ও বোমা মেশিন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএম/

Comments