পাকিস্তান-সৌদি আরবের বন্ধুত্বে ভারতের অস্বস্তি

প্রকাশিত: ৬:৩০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে কোনঠাসা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে নয়াদিল্লি। কিন্তু কূটনৈতিক ভাবে কোণঠাসা হওয়া তো দূরের কথা পুলওয়ামা কাণ্ডের চার দিনের মাথায় সৌদি আরবের কাছ থেকে দু’হাজার কোটি ডলারের উপঢৌকন পেল ইসলামাবাদ।

সাউথ ব্লকের কাছে সবচেয়ে বড় অস্বস্তির বার্তাটি এল দিনের শেষে। পাকিস্তান ও সৌদি আরবের যৌথ বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, ‘জাতিসংঘে জঙ্গি তালিকায় নাম তোলা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।’

ভারত যখন মাসুদ আজহারকে ওই তালিকায় আনতে চাইছে তখন এই ধরনের বিবৃতি খুবই অস্বস্তিকর নয়াদিল্লির কাছে। যৌথ বিবৃতিতে সন্ত্রাসবাদ দমনে পাক ভূমিকার ঢালাও প্রশংসা করে ও যৌথ সহযোগিতার কথা বলেও সাউথ ব্লকের রক্তচাপ অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন সৌদির যুবরাজ।

আর এই জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে নয়াদিল্লিতে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান।

প্রথম বার পাকিস্তানে গিয়ে যুবরাজ সালমান শুধু দু’হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তিই করেননি, তিনি বলেছেন, ‘সৌদি আরবে তিনিই পাকিস্তানের দূত!’ এর পরে যুবরাজের সংযোজন, পাকিস্তানের ডাকে তিনি ‘না’ বলতে পারেন না। কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

প্রশ্ন উঠেছে, ভারতে এত বড় জঙ্গি হানা ও এত প্রাণহানির পরেও সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানের প্রশংসা ও বিপুল বিনিয়োগ ঠেকানো গেল না কেন? কূটনীতির লোকজন বলছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের ভিত বহু দিন আগে থেকেই মজবুত।

পাকিস্তানে জঙ্গিদের অর্থ জোগানের ক্ষেত্রেও সৌদি আরবের নাম উঠেছে অতীতে। তা ছাড়া, ওই বিপুল অঙ্কের লগ্নি চুক্তি অনেক আগে থেকেই ঠিক হয়ে ছিল। তবে এটা ঠিক, পুলওয়ামায় জইশ-ই-মহম্মদের হামলার পর সৌদি-পাক সমীকরণে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কারণ, সৌদি আরব বরাবর ভারতেরও মিত্র দেশের তালিকায়।

রীতি ভেঙে ইমরান নিজে গাড়ি চালিয়ে যুবরাজকে নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, ২১টি গান স্যালুটে স্বাগত জানানো হয়েছে তাকে— সখ্যের এই সব মুহূর্ত ও বিভিন্ন চুক্তি সইয়ের কথা খবরের শিরোনামে

আসার পর থেকেই এই প্রশ্নটা আরও বেশি করে উঠছিল। অবশেষে সৌদি আরবের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জ়ুবেইর দেখা করেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মামুদ কুরেশির সঙ্গে। ওঠে পুলওয়ামা প্রসঙ্গ। কুরেশি তাকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানান।

যুবরাজ সালমানের ভারত সফরের আগে এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য (ভারত ও পাকিস্তান) দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো। আমরা চাই মতানৈক্য দূর করার কোনও শান্তিপূর্ণ পথ।’

তার মতে, ‘‘দু’টি দেশই সন্ত্রাস-সহ একই ধরনের সমস্যায় রয়েছে। আমরা চাই, দু’দেশই বিরোধ দূরে ঠেলে সমাধানের পথে হাঁটুক।”

সৌদি যুবরাজ সে দেশের জেলে থাকা ২০১৭ জন পাক বন্দিকে মুক্তি দেবেন বলে জানিয়েছেন। আশ্বাস দিয়েছেন, তার দেশে কর্মরত ২৫ লক্ষ পাক শ্রমিকের অবস্থার উন্নতির বিষয়টি দেখবেন।

তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার

বিআইজে/

Comments