ঠিকাদারের উদাসীনতায় দুর্ভোগে ত্রিশ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ

প্রকাশিত: ৬:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০১৯

মোঃ ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুই ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ছোট কালভার্ট ভেঙে বড় ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে প্রায় ৬ মাস যাবত ধরে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলের সুবিধা বাড়বে এমন প্রত্যাশা ছিল স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টদের। তবে ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরুর পর বর্ষার সময়ে চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তাটি হাঁটু সমান কাদায় পরিণত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে বেশি বৃষ্টি হলে বিকল্প রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বালিয়াডাঙ্গী (ডাঙ্গী) হরিণমারী জিসি ভায়া আধারদিঘী হাট নহনা নদীর ওপর ৪৫ মিটার গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে। পুরাতন ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ কাজ বর্ষার মৌসুমের আগেই শেষ করা কথা থাকলেও ঠিকাদারের উদাসীনতা এবং কাজের ধীরগতিতে চলতি বর্ষায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার বড়বাড়ী ও আমজানখোর ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরাতন ব্রিজ ভাঙার কাজ শেষ হওয়ার পর নতুন ব্রিজের কাজ শুরু হয়েছে গেল ১ মাস আগে। মাত্র শুরু হয়েছে পিলার তোলার কাজ। অথচ স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে ৬ মাসের মধ্যে পুরো ব্রিজ নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার কথা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির।

নহনা নদীর ওপর একটি কাঠের সাঁকো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিকল্প রাস্তা। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে চলাচলের বিকল্প রাস্তাটি বর্তমানে হাঁটু সমান কাদায় পরিণত হয়েছে। চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে পথচারীদের। বালিয়াডাঙ্গী শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দুই ইউনিয়নের ২৫ হাজার মানুষের।

ব্রিজের পার্শ্বের বাসিন্দা মিকাইল রহমান নামে এক যুবক আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, সকাল হলেই এলাকার সব মানুষেরা কাজ করতে যায় উপজেলা শহরে। উপজেলা শহরে যাওয়ার সহজ রাস্তাটি এখন হাঁটু সমান কাদা হওয়ার চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতা ছাড়া কিছু নয়। ইচ্ছে করেই বর্ষার মৌসুমে স্থানীয় দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন।

স্থানীয় মিন্নাত আলী নামে একজন জানান, আগামীকাল হাঁটু সমান কাদায় ধান রোপন করা হবে। এলাকার সকল মানুষকে বলা হয়েছে।

হরিণমারী এলাকা থেকে উপজেলা শহরের উদ্দেশে আসা করিমুল ইসলাম নামে পথচারী জানান, দুদিন হলো ১৫ কিলোমিটার ঘুরে শহরে কেনা-কাটার জন্য যেতে হচ্ছে। এর চেয়ে আগের ব্রিজটাই ভালো ছিল।

উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম মুঠোফোনে আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, আমি ঢাকায় এসেছি। মুঠোফোনে ঠিকাদারকে বিষয়টি বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত কাদা সরিয়ে দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটির লোকজন জানায়, পুরাতন ব্রিজটি ভাঙতে একটু সময় বেশি লেগেছে। এ জন্য ব্রিজ নির্মাণ কাজ হতে একটু সময় লাগবে। তাছাড়া হঠাৎ করে টানা বৃষ্টির কারণে এমন দুর্ভোগের সৃষ্টি হবে বুঝে উঠতে পারিনি।

Comments