কুবিতে ভাষা শহীদদের স্মরণ

প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯

খোরশেদ আলম,কুবি প্রতিনিধি; যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ৫২-র ভাষা শহীদদের স্মরণে একুশের প্রথম প্রহর থেকে শুরু হয় দিবসটি পালনের আনুষ্ঠানিকতা।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০ টা থেকে দিবসটি স্মরণে কালো ব্যাজ ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২ টা ০১ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। এরপর একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, হলসমূহ, শাখা ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ, বিভিন্ন বিভাগসমূহ, বিভিন্ন সহযোগি সংগঠন ও আঞ্চলিক সংগঠনগুলো ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়।

শ্রদ্ধা জানানোর আগে বুধবার রাত ১০ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হয় দিবসটি পালনের প্রস্তুতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিবর্তন একুশের গানে গানে স্মরণ করে ভাষা শহীদদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য সংগঠন ‘থিয়েটার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ শহীদ মিনারে মঞ্চায়ন করে নাটক ‘একুশের সেকাল একাল’।

তারপর দিবসটির উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিংবদন্তি সুরকার শহীদ আলতাফ মাহমুদ এর কন্যা শাওন মাহমুদ।

শাওন মাহমুদ তার বাবাকে স্মরণ করে বলেন, বাবা যখন আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গানটির সুর করেন তখন তিনি একদম তরুণ। বাবা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৩১ আগস্ট পাকিস্তানিরা বাবাকে ধরে নিয়ে যায়।

তিনি বলতে থাকেন, বাবার সাথে থাকা একজন সহযোদ্ধা আমাকে বাবার শেষ ভাত খাওয়ার গল্প বলেছিলেন। হাতে রক্ত, হাঁটু ভেঙ্গে দেয়া একজন যোদ্ধা পেঁপে ভাজি, কাঁচামরিচ দিয়ে সাদা ভাত খাচ্ছেন। বাবার এই শেষ ভাত খাওয়ার দৃশ্য যখন আমি দেখি তখন আমি বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা দেখি।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ভাষা একটি জাতির স্বকীয়তা কে বহন করে। ভাষার জন্য এমন আত্মত্যাগ এর নজির পৃথিবীর আর কোথাও নেই। এমন ত্যাগ শুধু এই বাংলা মায়ের সন্তানেরাই করতে পারে।

এছাড়াও ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে উত্তোলন করা হয়। বাংলা বিভাগের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার অভিমুখে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে প্রভাত ফেরি।

বিআইজে/

Comments