‘সবাইকে জেলে পাঠিয়ে কার সঙ্গে খেলবেন’ প্রশ্ন ফখরুলের

প্রকাশিত: ৫:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৬, ২০২৩
গণ অধিকার পরিষদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল

নির্বাচনের আগে বিরোধী নেতা-কর্মীদের পুরোনো মামলায় সাজা দিয়ে সরকার মাঠ ফাঁকা করছে উল্লেখ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য দিচ্ছেন যে খেলা হবে। কার সঙ্গে খেলবেন? বিরোধীদের সবাইকে জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। খালি মাঠে ওয়াকওভার নিয়ে জিততে চাচ্ছেন।’

আজ শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর পুরানা পল্টনের কালভার্ট রোডে গণ অধিকার পরিষদের (নূর) সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে গণ অধিকার পরিষদ (নুরুল-রাশেদ)। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক (নুর) ও সঞ্চালনা করেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ পরপর দুটি নির্বাচনে ছলচাতুরী করে ভোটার উপস্থিতি ছাড়া ক্ষমতা দখল করেছে। একই কায়দায় এবারও নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। তবে এবার বাধা দিচ্ছে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো। তারা বলছে, এবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে।

দেশ ভয়াবহ সংকটের মুখে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুলবলেন, প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের নেতারা জোরেশোরে বলছেন, এবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। যত নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, তারা পুরোনো মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে বিরোধীদের সাজা দিচ্ছে। বিরোধীদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিচারকদের এবং মামলার অভিযোগপত্র করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই তাদের সুষ্ঠু নির্বাচন।

সরকার নির্বাচনের আগে উন্নয়ন প্রকল্পের যে উদ্বোধন করছে, তাতে কাজ হবে না দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিমানবন্দরে দেখলাম, সফট ওপেনিং। বিমানের চলাচলের টারমার্ক তৈরি হয়নি, ভবনের কাজ শেষ হয়নি। তা–ও উদ্বোধন করা হচ্ছে। এসব উদ্বোধনে কাজ হবে না।

দেশের মানুষের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চাল, ডাল, তেল, লবণসহ জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। মানুষ বাচ্চার মুখে খাবার তুলে দিতে পারছে না। ব্যবসায়ীরা প্রমাদ গুনছেন। পোশাক কারখানার মালিকেরা শ্রমিকের বেতন দিতে পারছেন না। প্রতি মাসে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। দেশকে বাঁচাতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে বের হয়ে আসতে হবে।

গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে গণ অধিকার পরিষদের (নুরুল-রাশেদ) সংহতি সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের একাংশ। কালভার্ট রোড, পুরানা পল্টন, ঢাকা, ৬ অক্টোবর

সভাপতির বক্তব্যে নুরুল হক নুর বলেন, সরকার দেশকে রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গ্রাম থেকে পাড়ামহল্লায় আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। অক্টোবরের মধ্যেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। সংঘাত না চাইলে এই মাসেই সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করুন।

এ সময় রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের খেলা হবে বলে জনগণের ভোটাধিকার হরণের খেলা খেলতে চান। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে খেলেছিলেন। তাঁরা আবারও খেলতে চান। এবার খেলা হবে ভোট চোরের বিপক্ষে।

সমাবেশে বক্তারা এ–ও বলেন, তলে তলে এই দেশে কোনো আপস হবে না। যা হওয়ার প্রকাশ্যে হতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান, গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, নুরে এরশাদ সিদ্দিকী ও শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

Comments