সবার কাছে অধ্যক্ষের ক্ষমা প্রার্থনা; দোষী হলে পদত্যাগ

প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০১৮

একুশ নিউজ: ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস স্কুল ছাত্রী অরিত্রি অধিকারী (১৫) আত্মহত্যায় সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেয়া এবং স্কুলে ডেকে বাবা-মাকে অপমান করায় ছাত্রীর বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি দেশবাসী ও ছাত্রীর বাবা-মায়ের প্রতি ক্ষমা চান।

অধ্যক্ষের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত কমিটির রিপোর্টে দোষী সাব্যস্ত হলে আমি পদত্যাগও করবো, প্রয়োজনে আদালতের কাঠগড়ায়ও দাঁড়াবো।’

অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, নিয়োগ বা পদত্যাগ কোনোটিই আমার বিষয় না। এ ঘটনায় স্কুল ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যেই দুইটি কমিটি গঠিত হয়েছে তারাই এর সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্ত প্রতিবেদনে যদি আমি অপরাধী হই তাহলে শুধু পদত্যাগ নয়, আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলে দাঁড়াবো।’

মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় স্কুলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি খুব দুঃখজনক ঘটনা, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমাদের একজন ছাত্রীর মৃত্যু হল-সে জন্য আমরা সবাই ক্ষমা প্রার্থী। ছাত্রীর বাবা-মায়ের কাছেও আমি ক্ষমা চাচ্ছি।

অধ্যক্ষ বলেন, আমাদের স্কুলে কিছু নিয়মকানুন আছে, এই নিয়মকানুন মেনেই বাবা-মা এ স্কুলে আসে। তার বাবা-মা শাখাপ্রধানের কাছে এসে সরি বলেন। এ ছাড়া শাখাপ্রধান বলেছেন, আমাদের নিয়মকানুন আছে; সেটি আপনাকে মানতে হবে। তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই; আর সেটি উনারা মানতে পারেননি।

স্কুলের শিক্ষকরা অভিভাবকের সঙ্গে খারাপ আচরণের বিষয় তিনি বলেন, আমরা সব শিক্ষককে বলে দিয়েছি-তারা যেন সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন।

আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তার পর বিস্তারিত বলা যাবে। তিনি আরও বলেন, সোমবার রাতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত করে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গভর্নিং বডির সদস্য আতাউর রহমান, তিন্না খুশি জাহান মালা, শিক্ষক ফেরদৌসী বেগমকে তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে স্কুলের সামনে অভিভাবকরা সাংবাদিকদের বলেন, অচিরেই অস্থায়ী প্রিন্সিপালকে অপসারণ করতে হবে, বিগত ১০ বছর ধরে স্কুল কর্তৃপক্ষের কারণে এমন ঘটনা ঘটছে। একটি সামান্য ভুল সংশোধনের সুযোগ না দিয়ে তাচ্ছিল্যে করেছেন, যা সব অভিভাবকের সঙ্গেই করেন। একজন শিক্ষকের কাছ থেকেও ভালো আচরণ এখান থেকে পাওয়া যায় না।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন বলেন, এখানে অভিভাবকের সঙ্গে চাকরের মতো ব্যবহার করে, আমার স্ত্রী এসেছে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলার জন্য, তারা আমার স্ত্রীকে বলে হিজাব পরে এসেছেন কেন! এমন সব আচরণ করে তারা।

ছাত্রী অরিত্রির অনেক সহপাঠী স্কুলের আজকের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। স্কুলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মূলফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

/সিএইচ

Comments