রাজবাড়ীতে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষিকা ধর্ষণের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০১৮

অনিক সিকদার, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী): রাজবাড়ীতে এক মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দিতে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বকচর খুরশিদা ও সেলিনা-তুজ-জোহরা বালিকা হাফিজিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মহতামিম (অধ্যক্ষ) মাওলানা সোয়াইব হোসেন কতৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছে নতুন যোদানকারী এক শিক্ষিকা (১৯)।

এঘটনায় গতকাল শনিবার (১০ নভেম্বর) বালিয়াকান্দি থানায় অভিযুক্ত মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সোয়াইব হোসেন (৪০) কে আসামী করে মামলা করেছেন ঐ শিক্ষিকার স্বামী।

একই দিন বিকেলে ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা শেষে আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩) এর ৯(১) ২২ ধারায় তার জবানবন্দী রেকর্ড করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৮ই নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের বকচর গ্রামে ঐ প্রিন্সিপালের বাড়ীতে এ ধর্ষনের ঘটনা ঘটে।

ঐ শিক্ষিকার স্বামী জানান, তার বাড়ী ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার দেলবারিয়া গ্রামে। ওই মাদরাসায় তার স্ত্রীর চাকরি হয়।

চাকরিতে যোগদানের উদ্দেশ্যে নিজবাড়ী থেকে গত ৮ই নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে তারা দু’জন (স্বামী-স্ত্রী) বকচর গ্রামে ঐ মাদরাসার প্রিন্সিপালের বাড়ীতে আসেন এবং স্ত্রীকে রেখে তিনি বাড়ীতে চলে যান। প্রিন্সিপালের বাড়ী ঐ মাদরাসার এরিয়ার মধ্যেই।

রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে তার স্ত্রীকে এক গ্লাস দুধ খেতে দেয় ঐ মাদরাসার এক ছাত্রী। দুধ খাওয়ার পর তারা দুজনই ঐ প্রিন্সিপালের বাড়ীর পূর্বপার্শের টিন সেড ঘরের মধ্যে শুয়ে পড়ে।

এরপর তার স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়লে ঐ ছাত্রী রুম থেকে বের হয়ে এসে অন্য ছাত্রীদের থাকার রুমে চলে যায়।

এ সুযোগে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রিন্সিপাল মাওলানা সোয়াইব হোসেন ঐ রুমে প্রবেশ করে শিক্ষিকাকে ঝাপটে ধরে।

এরপর সে তাকে খুন জখমের ভয়ভিতি দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষন করে এবং তার গলাই ১ ভরি ওজনের একটি চেইন, কান থেকে ৮ আনা ওজনের এক জোড়া কানের দুল ও ব্যাগের মধ্যে থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে বহির থেকে ঘরের দরজায় তালা বন্ধ করে দেয়।

পরদিন সকালে ঐ ছাত্রী ঘরের দরজার খুলে দেয়। এরপর ঘটনাটি তার স্ত্রী মোবাইলে তাকে জানায়।

এদিকে খবর পেয়ে গত ৯ই নভেম্বর বিকালে বালিয়াকান্দি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করাসহ ধর্ষণর ঘটনায় সহায়তাকারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।

এঘটনায় ঐ শিক্ষিকার স্বামী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। বালিযাকান্দি থানার মামলা নং ১০, তাং ১০/১১/১৮, ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/০৩)এর ৯(১)।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম আজমল হুদা জানান, খবর পেয়ে গত শুক্রবার বিকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করাসহ এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা নিয়ে আসা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। শনিবার ঐ শিক্ষিকাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা সোয়াইব হোসেন পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

/আরএ

Comments