ইসলামী আন্দোলনের ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ব্যাখ্যা

প্রকাশিত: ১১:২২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০১৮

ইসলামী আন্দোলনের ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ব্যাখ্যা

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩০০ আসনে নির্বাচন
করবে এটা দলের কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত। দল জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়াকেই যৌক্তিক মনে করছে। কারণ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি আদর্শিক আন্দোলন করে যাচ্ছে।

কায়েমী স্বার্থবাদীদের কেউই ইসলামী আন্দোলনের আদর্শ অর্থাৎ ইসলামী আদর্শ মেনে নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে জোট করবে না। অন্যান্য ইসলামী দলগুলো নিজেদের অদূরদর্শিতা এবং স্বার্থবাদীতার কারণে ইসলামী দল সমূহের স্বতন্ত্রভাবে বৃহত্তর ঐক্যের চিন্তা না করে এদিক ওদিক যাওয়ার প্রবনতা এখনো পর্যন্ত প্রবল।

এরশাদ সাহেব ইসলামী আদর্শ মেনে নিলেও তার এই মেনে নেয়ার মূল্য নেই। ২০০১ সালে তিনি ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি কথা রাখেন নি। আর এখনতো তিনি গৃহপালিত বিরোধী দল নামে খ্যাত।
তাই বাধ্য হয়ে ইসলামী আন্দোলনকে একলা চলার নীতি অবলম্বন করতে হবে। নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে নিজেদেরকে দেশের রাজনীতিতে মূলশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সে পথেই হাটছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নির্বাচনে অংশ নিলে এবং ৩০০ আসনে প্রার্থী দিলে কী কী লাভ হবে।
তা নিম্নে প্রদান করা হলো;

১) ইসলামী বিপ্লবের মৌলিক উপাদান শক্তিশালী হবে।ইসলামী বিপ্লবের মৌলিক উপাদান তিনটি;
( ক) যোগ্য নেতৃত্ব ( খ) দক্ষ কর্মীবাহীনি ( গ) গতিশীল সংগঠন।
নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে যারা প্রার্থী হবেন এবং যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাদের মাঝে নেতৃত্বের গুন সৃষ্টি হবে।
কর্মীরা প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে সক্ষম হবে।
আর এই দুই উপাদান শক্তিশালী হওয়ার মাধ্যমে সংগঠন গতিশীল হবে।

২) নেতা-কর্মীদের নিষ্ক্রীয়তা দূর হবে।
যে আসনে প্রার্থী থাকবে না সে আসনের নেতা-কর্মীরা অলস সময় কাটাবে। ক্ষেত্র বিশেষ তাগুতের সহচরও হয়ে যেতে পারে।

৩) গণ-দাওয়াত; নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যাপকভাবে গণ দাওয়াত চলবে। নির্বাচনের সময় যে ভাবে মানুষের নিকটে যাওয়া যায় তা অন্য সময় হয় না। মানুষ এটাকে স্বাভাবিক মনে করে। কর্মীরা ভয় -ভীতি ও লজ্জা শরমের উর্ধ্বে উঠে দাওয়াতী কাজ করবে।

৪) প্রবল প্রতিপক্ষের দৃষ্টি এড়িয়ে সফল বিপ্লবের প্রস্তুতি নেয়া।
নির্বাচন অংশ গ্রহণ না করলে প্রতিপক্ষ তাগুত ইসলামী আন্দোলন কে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে পারে।

৫) মানুষের ভোটের হেফাজত হবে।
দেশের মুসল্লী,মুবাল্লিগ,উলামা-তলাবা, মুরিদান যারা ইসলামকে ভালোবাসে তারাও তাগুতকে সমর্থন দিয়ে গুনাহগার হবে। তাই তাদের মতামত ও ভোটের হেফাজতের জন্য ইসলামী আন্দোলনকে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়।

৬) হাতপাখার মাধ্যমে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা।
যারা আ’মীলীগ- বি,এন,পি করে তারা এসব দলের আদর্শের প্রতি মুগ্ধ হয়ে করে না। বরং ধানের শীষ এবং নৌকার পরিবেশে বেড়ে উঠার কারণে তারা প্রভাবিত হয়ে এসব দল করে। পরে এক সময়ে নেশা এবং পেশার কারণে করতে থাকে।
তাই ইসলামী আন্দোলনকে হাত পাখার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে আগামী প্রজন্ম ইসলামী আন্দোলন করে।

৭) মূলশক্তির যোগ্যতা অর্জন হবে;
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কারো সহযোগী নয় বরং মূলশক্তি। এ কথা অনেকে জানেনা, বুঝেনা। ইসলামী আন্দোলন ৩০০ আসনে যখন নির্বাচন করবে, তখন সবাই দেখবে এটি একটি মূলশক্তি কারো সহযোগী নয়।

৮) গুজব ছড়ানোর সুযোগ না দেয়া।
যেসব আসনে প্রার্থী থাকবে না, সেসব আসনে
দুষ্ট শত্রুরা গুজব ছড়াবে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবে যে, ইসলামী আন্দোলন অমুক দলকে সমর্থন দিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে সর্ব স্তরের জনগনের সামনে যখন দূর্নীতি -দুঃশাসনের বিরোদ্ধ জোরালো বক্তব্য রাখবে। তখন তারা গুজব ছড়ানোর সুযোগ পাবে না।

৯) আদর্শ প্রচারের সিজন বা কাল হচ্ছে এই নির্বাচন।
নবীজি সা. উকাজ বাজারের মেলাতে এবং হজ্জের মৌসুমে দাওয়াত দিয়ে ছিলেন। সিজনকে কাজে লাগিয়ে ছিলেন। তদ্রুপ ইসলামী আন্দোলন ও নির্বাচনের বাজারে নিজের আদর্শ ইসলামের দাওয়াত ও প্রচার কাজে তৎপরতা চালাবে।

১০) ১৪,২৪,ও২৬ হাজার ভোটে মিডিয়া পাড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ১ কোটি ভোটের টার্গেট পূরণ হলে মিডিয়া অস্থির হয়ে যাবে।
যার কারণে পরবর্তীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের রাজনীতিতে মূলশক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইনশাআল্লাহ!

লেখক:- মাওলানা আবদুর রাজ্জাক

Comments