বিএনপি

ইইউ’র সিদ্ধান্তে প্রমাণ হলো দেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই

প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
ফাইল ছবি

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্তে প্রমাণ হলো- এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। আমরা সবসময়ই বলে আসছি- আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। এটা পরীক্ষিত। তাদের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, জনগণ যে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না- এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ কানে তুলো দিয়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন বিদেশিদের কাছে কথা দিয়েছিলেন- এবার খুব সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন, কোনো চিন্তার কারণ নেই- তখন ইইউ একটা প্রাক-নির্বাচনী টিম পাঠিয়েছিল। ওই টিম বাংলাদেশের সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কথা বলেছে। তারা প্রতিবেদন দিয়েছে- এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হয়ে গেল- শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

তারা একটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছে- শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রাখতেই হবে। যে জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে সেই বিষয়টা কীভাবে মেনে নেবে। আমরা একটি রাজনৈতিক দল। আমরা একটা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছি। এর আগে আমরা সরকারে ছিলাম, বিরোধী দলে ছিলাম। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছি। এই বিষয়গুলো আমরা জনগণের সামনে তুলে ধরছি।

আওয়ামী লীগ কী দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বরাবরই আওয়ামী লীগের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি- তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। দেশকে রক্ষার জন্য, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য দয়া করে পদত্যাগ করুন। যতদিন আপনি ক্ষমতায় থাকবেন দেশ আরও সংঘাতের দিকে যাবে। সংঘাত বাড়তে থাকবে। এখনো তো সংঘাত শুরু হয়নি। আওয়ামী লীগ যেভাবে এগুচ্ছে দেশের জনগণ রুখে দাঁড়াবে। আওয়ামী লীগের কাছে আমাদের আহ্বান একটাই- প্লিজ, রিজাইন। ওই অবস্থান থেকে সরে আসুন। পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণকে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করুন।

নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না ইইউ

শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করলে আন্দোলন কে এগিয়ে নিয়ে যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে ১৫-১৬ বছর ধরেই চলছি। আমাদের কোনোরকম দমাতে পেরেছে? জনগণকেও পারছে না। মামলা-মোকদ্দমা কোনো কিছুতেই এই আন্দোলনকে স্তিমিত করা যাবে না।

বগুড়া টু রাজশাহী রোডমার্চের বহরে নাটোরে হামলার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, নাটোরে আমাদের নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলা করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ঘটনার আশপাশে থাকা মানুষ যদি এগিয়ে না আসতো তবে গাড়ির ভেতরে যারা ছিলেন তাদের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে মারতো। সুতরাং সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস এখন কারা করে তা পরিষ্কার হয়ে গেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর আইনানুগ ব্যবস্থার জোর দাবি করেন তিনি।

মির্জা ফখরুলকে ঢাকায় ঢুকতে দেয়া হবে না- ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ফজলে নূর তাপসের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের কেমন মানসিকতা তার কথার মধ্যেই পাবেন। তাদের কথাবার্তা, ক্যারেক্টার, বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সবসময় একটা সন্ত্রাসী ভাব থাকে। মনে হয় এটা তাদের জমিদারি যে তারা কাউকে ঢুকতে দিবে আবার দিবে না। তিনি বলেন, এদের কথাকে আমরা গুরুত্ব দেই না। বাংলাদেশের মানুষ এদেরকে নিয়ে ভাবে না। বাংলাদেশের মানুষের লক্ষ্য একটাই- তারা একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এর শেষ পর্যন্ত যাবো। পরবর্তী আচরণ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে সরকারের ওপরে। সরকারের আচরণ কী হবে সেটার ওপরে আমাদের আন্দোলন নির্ভর করবে। এটা পরিষ্কারভাবে বলেছি।

/এসএস/একুশনিউজ/

Comments