ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা কাদের সিদ্দিকীর নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২:৪৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০১৯ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। তার বেরিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গড়ে ওঠা বৃহত্তম রাজনৈতিক এ মোর্চায় ভাঙন দেখা দিল। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার ঘোষণা দেন মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখা এ রাজনীতিবিদ। আগের রাতে দলের নীতিনির্ধারকরা বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন। কাদের সিদ্দিকী ঐক্যফ্রন্টে থাকবেন না, এটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ কিছু দিন ধরে গুঞ্জন চলছিল। আজ সেটি বাস্তবে রূপ নিল। জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। একাদশ সংসদে শরিকদের না জানিয়ে বিএনপি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণসহ নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী। ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও প্রধান দল বিএনপির কাছ থেকে ‘প্রত্যাশামাফিক’ উত্তর না পাওয়ায় জোট ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ সময় কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘নির্বাচন-পরবর্তী এই সাত মাস জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আনুষ্ঠানিকভাবে মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের অফিসে একটি অসমাপ্ত বৈঠক ছাড়া কখনও কোনো নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তাতে মনে হয় কোনো কালে, কখনও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক জোট গঠন হয়নি।’ তিনি বলেন, এমতাবস্থায় দেশের জনগণের প্রকৃত পাহারাদার হিসেবে গঠিত কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ বসে থাকতে পারে না। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জনগণকে পাশে নিয়ে নতুন উদ্যমে পথচলা শুরুর অঙ্গীকার করছি আমরা। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন উপস্থিত না থাকায় গত ১০ জুন কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভা মুলতবি করা হয়। এর পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও মুলতবি সভা আর আয়োজন করা হয়নি। কাদের সিদ্দিকীর দাবি, বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীদের ক্ষোভ বেড়েছে। ঐক্যফ্রন্টের এমন কর্মকাণ্ডে তাদের নেতা কাদের সিদ্দিকীকে অবজ্ঞা করা হয়েছে বলেই মনে করেন তারা। এমন প্রেক্ষাপটেই গত বৃহস্পতিবার দলের বর্ধিতসভায় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার দাবি তোলেন দলের নেতাকর্মীরা। এর আগেও নির্বাচন-পরবর্তী ঐক্যফ্রন্টের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলে জোট ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কাদের সিদ্দিকী। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, রোববার রাত ১১টায় সিদ্ধান্ত হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকছে না কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। সোমবার সকালে সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন কাদের সিদ্দিকী। এর পরই ফ্রন্ট ছাড়ার ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ ইকবাল সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা তো ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের কাছে। ১০ জুন ফ্রন্টের বৈঠক হয়েছে। কথা ছিল সেই বৈঠকে ব্যাখ্যা দেবে। কাদের সিদ্দিকী চিঠি দিয়েছেন। সংসদে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কে দিয়েছে- সেটি তো আমরা জানি না। এই সিদ্ধান্ত কে নিল, কেউ বলতে পারে না। আমি নিজেও স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য, আমি জানি না। আমাদের নেতাও জানেন না। আমরা সবাই জানি, ড. কামাল হোসেন শীর্ষনেতা, কিন্তু তার কাছে তো আমরা জানতে চেয়েছি, কিন্তু তিনিও বলতে পারেন না। এসব কারণেই আমরা ফ্রন্ট ছাড়ছি।’ ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে গঠন হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। প্রথমে বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া মিলে ঐক্যফ্রন্ট গঠন হয়। গত বছরের ৫ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেন কাদের সিদ্দিকী। Comments SHARES রাজনীতি বিষয়: