ভালো নেই মাগুরার প্রতিমাশিল্পীরা

প্রকাশিত: ৩:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০১৮

আর কয়দিন পরই শুরু হচ্ছে দুর্গাপূজা। কিন্তু ভালো নেই মাগুরার প্রতিমা শিল্পীরা। কেউ কেউ এ পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। কেউ এখনো শখের বশে এ পেশায় আছেন।

মাগুরার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ প্রতিমা শিল্পী এখন আর প্রতিমা তৈরিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পারছে না। জীবিকার প্রয়োজনে তাদের অন্য পেশা বেছে নিতে হচ্ছে। নিজের সন্তানরা কেউ এ পেশায় আসুক তারা আর চাইছেন না।

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলাধীন নহাটা গ্রামের অশোক পালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অর্থাভাবে পড়াশুনা চালাতে পারেননি তিনি। ১০ বছর বয়স থেকে বাবার সঙ্গে তিনি এ কাজ শুরু করেন। ৫৫ বছর বয়সী অশোক এ পেশার মাধ্যমে তার সংসারের চাকা ঘোরাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

অশোক পাল বলেন,‘এবছর চারটি মণ্ডপে আমরা কাজ করছি। আমাদের দলে মোট চারজন সদস্য। প্রতি মন্ডপ থেকে হয়ত ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দেবে। সবমিলে ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আমরা পাব। চারজনের মধ্যে এ টাকা ভাগ করে দিলে ৩৫ হাজার টাকার বেশি হবে না। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় আয়। এছাড়া কাত্যায়নী পূজা থেকে কিছু আয় হয়। আগে স্বরস্বতি, কালী, লক্ষী ঠাকুর বানিয়ে বিক্রি করতাম। এখন নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তা থেকে সামান্যই আয় আসে।

মাগুরা সদর উপজেলার বরই গ্রামের প্রতিমা শিল্পী অপূর্ব পাল বলেন, ‘দেশে ক্রমান্বয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের হার কমে যাওয়ায় পূজার পরিমাণও কমে যাচ্ছে। তার ওপর প্রতিমা নির্মাণের ব্যয়ও বেড়েছে। এ অবস্থায় পাল সম্প্রদায়ের মানুষ প্রতিমা নির্মাণের কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। বছরে হাতেগোনা কয়েকটি কাজ করি বাকি সময়টা চাষের কাজ করি। এটা বাপ-দাদার পেশা তাই ছেড়ে দিতেও পারি না। এখন পেশা হিসেবে নয় বরং নেশায় প্রতিমা গড়ি। আমি চাই না আমার সন্তানরা কেউ এ পেশায় আসুক। আমি চেষ্টা করছি তাদের পড়ালেখা করাতে।

স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা পল্লী-প্রকৃতির নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন,‘পাল সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে দিচ্ছে এটা দুঃখজনক। তাদের কিভাবে এ পেশায় ফিরিয়ে আনা যায় তার জন্য এখনই একটি সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’

Comments