নদীতে নিষেধাজ্ঞা; জেলেরা ডাঙায়

প্রকাশিত: ৬:২১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০১৮

মুহাম্মদ নোমান ছিদ্দীকী, কমলনগর, লক্ষীপুর: চলছে ইলিশের প্রজনন মৌসুম। মেঘনায় মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা। জেলেরাও যাচ্ছেন না শিকারে। যতদূর চোখ যায় নদীতে নৌকা নেই। জেলেরা এখন ডাঙ্গায়। তাবুও তাদের বিরাম নেই। শিকারে নয়; এখন তারা ব্যস্ত ছেঁড়া-ফাঁটা জাল বুনে ঠিক করায়।

লক্ষীপুরের মেঘনাপাড়ে প্রায় ৬০ হাজার জেলের বসবাস। জেলার রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও সদর উপজেলার জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা চালায়। এখানকার জেলেদের বিকল্প কাজ নেই, মাছ শিকার একমাত্র পেশা। যখন নদীতে মাছ ধরতে নিষেধাজ্ঞা চলে তখন তারা জালের রশি বদলানো, ছেড়া জাল মেরামত ও মাছ ধরার নৌকা সংস্কার করেন।

রোববার (৭ অক্টোবর) বিকালে কমলনগরের ফলকন ও মাতাব্বরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় জেলেরা দল বেধে জাল বুনছেন। কেউ কেউ নৌকা ও নৌকার ইঞ্জিন ঠিক করছেন। এসময় নদীতে কোনো মাছ ধরার নৌকা চোখে পড়েনি। মেঘনাপাড়ের জেলেরা বলছেন, এবার নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়েনি। মহাজনের দাদনের টাকাও শোধ হয়নি। শিকারে গিয়ে জাল-নৌকার বেশ ক্ষয় হয়েছে। নতুন করে জাল কেনার পুঁজি নেই। ছেঁড়া জাল সেলাই করে রাখছেন; নিষেধা্জ্ঞা শেষে এ জাল দিয়েই মাছ ধরবেন বলে জানান তারা।

রোববার ৭ অক্টোবর থেকে ইলিশের প্রজনন মৌসুম শুরু হয়েছ। চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত । এ ২২দিন লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সকল প্রজাতির মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রজনন ক্ষেত্রে মাছ ধরা যাবে না। এসময় মাছ শিকার, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ।

এ আইন আমান্য করলে রয়েছে জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দন্ডের বিধান। আর এজন্যই এই সময়টাতে মাছ ধরতে না পারায় স্থানীয় জেলেরা এখন ডাঙ্গায় মাছ ধরার সব উপকরণ ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম মহিব উল্লাহ বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে চাঁদপুরের ষাটনল পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার মেঘানা নদী এলাকায় মাছ ধরা যাবে না।

এ আইন আমান্য করলে ১ বছর থেকে ২ বছরের জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা ফের নদীতে জাল ফেলবেন। সে লক্ষ্যে তারা জাল ও নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত।

/আরএ

Comments