রাষ্ট্রপতির ক্ষমায়; শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের মুক্তি নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:০৫ পূর্বাহ্ণ, মে ৩১, ২০১৮ স্টাফ রিপোর্টার : নব্বইয়ের দশকের শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ জোসেফ রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের ক্ষমায় মুক্তি পেয়েছেন। জানা যায় মুক্ত হয়েই তিনি ভারতে উড়াল দিয়েছেন। বুধবার (৩০ মে) সচিবালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘তার (জোসেফ) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। তিনি ২০ বছর কারাভোগ করেছেন। কারাভোগের পর ডিউ প্রসেসে আবেদন করা হয়। সে আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (জোসেফ) আবেদন করেছিলেন যে তিনি ভয়ানক অসুস্থ। তার সাজাভোগের এক কিংবা দেড় বছর বাকি ছিল। সে জন্য তিনি মার্সি পিটিশন করেছিলেন। খুব সম্ভবত মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছেন।’ মুক্তি পাওয়ার পর জোসেফ ভারতে চলে গেছেন বলে তথ্য রয়েছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জোসেফের কিছু অর্থদণ্ডও ছিল। সেগুলো আদায় সাপেক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাকে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করার অনুমতি দিয়েছে এটুকুই আমি জানি, এর চেয়ে বেশি কিছু জানি না।’ এদিকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মো. জাহাঙ্গীর কবির জানান, ‘জোসেফের মুক্তির বিষয়ে গত রোববার কারাগারে আদেশ আসে। আদেশ পাওয়ার পর রোববারই জোসেফকে মুক্তি দেওয়া হয়।’ ১৯৯৬ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা হত্যা মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০০৪ সালের ২৫ মে এক রায়ে আসামি জোসেফ ও মাসুদ জমাদারকে ফাঁসি এবং কাবিল সরকার, আনিছ আহমেদ এবং জোসেফের ভাই হারিছ আহমেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে জোসেফ, মাসুদ ও কাবিল। আসামি আনিছ ও হারিছ শুরু থেকেই পলাতক। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শেষে ২০০৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের সাজা বহাল রাখেন। অপর ফাঁসির আসামি মাসুদ জমাদার খালাস পায়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে আপিল করে জোসেফ ও কাবিল। ওই আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর জোসেফের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এছাড়া মামলার অপর আসামি কাবিল সরকারের আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দেন সর্বোচ্চ আদালত। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন এই তোফায়েল আহমেদ জোসেফ। অভিজাত পরিবারের সন্তান জোসেফের বড় ভাই মেজর জেনারেল আজিজ আহমদ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক মহাপরিচালক। তাদের বাবা বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ওয়াদুদ আহমেদ। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট জোসেফ বড় ভাই হারিস আহমেদের হাত ধরে রাজনীতির মাঠে পদার্পণ করেন। নব্বইয়ের দশকে জাতীয় পার্টি ছেড়ে হারিস যোগ দিয়েছিলেন যুবলীগে। তৎকালীন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও হয়েছিলেন তিনি। জোসেফ তার বড় ভাইয়ের ক্যাডার বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বপালন করেন। এরপর থেকে মোহাম্মদপুর-হাজারীবাগসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন জোসেফ। যোগ দেন সুব্রত বাইনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আলোচিত সেভেন স্টার গ্রুপে। পুরো রাজধানী তখন সেভেন স্টার গ্রুপ ও ফাইভ স্টার গ্রুপ নামে দুটি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করত। এভাবেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম উঠে আসে জোসেফের। ১৯ বছর আগে জোসেফের নামে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র বহনের অভিযোগে কমপক্ষে ১১টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ব্যবসায়ী মোস্তফা হত্যা মামলা ছাড়া বাকিগুলোর নিষ্পত্তি হয় ২০১৫ সালের অনেক আগেই। #একুশ নিউজ’/এএইচ Comments SHARES অপরাধ বিষয়: