এই সংসদে আমি একাই বিরোধী জোট থেকে নির্বাচিত সদস্য: সুলতান মনসুর নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০১৯ ডেস্ক: শপথ গ্রহণের পর প্রথম দিনেই জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে সুলতার মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেছেন, এই সংসদে ৯৯ পার্সেন্ট সদস্যই এক জোট থেকে নির্বাচিত হয়েছে। আমি একাই ভিন্ন জোট থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এসেছি। আমি আশা করবো, মহাজোটের বিরোধী একজন অন্য জোটের ব্যক্তি হয়ে যাতে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি, জনগণের কথা বলতে পারি, বাংলার মানুষের কথা বলতে পারি, সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে পারি। দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েই প্রথমদিনই আজ জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত বঙ্গবন্ধুর ৭মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণের ওপর বক্তৃতা দিতে দাঁড়িয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, গোপালগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ নিয়ে সাড়ে ৭ কোটির মানুষের যে বাংলাদেশ সেই বাঙ্গালী জাতিকে যিনি ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন তার নাম হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ৭ই মার্চে আজকে আমি মহান জাতীয় সংসদে শপথ গ্রহণ করেছি। নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে দাবি করে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু আমার নেতা ছিলেন, আমি তারই সৈনিক। চিরদিন বঙ্গবন্ধু আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করব, সাদাকে সাদা বলব, কালোকে কালো বলব। একদিন তারই আদর্শে নিয়ে রাজনীতি করেছি, বঙ্গবন্ধু আমার নেতা, তার আদর্শ থেকে কখনো বিচ্যুৎ হবো না। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য আজকে সংসদে যারা আছেন, তারা এক জোটের পক্ষ থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। আমিই বোধহয় একজন নীলমনি যে বর্তমানে আপাতত জোটের বাইরে অন্য জোট থেকে নির্বাচিত হয়েছি। গত নির্বাচনে অন্য আসনের নির্বাচনে কী হয়েছে সেটা তারা জানেন। তবে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মৌলভাবাজর-২ আসনের কুলাউড়া মানুষের স্বত:স্ফুর্ত সমর্থনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এখানে এসেছি। তাই সংসদে আমি কলোকে কালো এবং সাদাকে সাদা বলব। এখানে ৯৯ পার্সেন্ট হচ্ছে এক জোটে আর আমি অন্য জোট থেকে এসে রাজনীতি করছি। তবে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু এই প্রশ্নে কোন আপোষ নেই। এসময় তিনি সরকার প্রধান হিসেবে আজকে সংসদ নেত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। সুলতান মনসুর আরো বলেন, আজকে আমারও কিন্তু ওইখানে থাকার কথা ছিলো। অর্থাৎ যদি ওই জোটের পক্ষ হয়ে রাজনীতি করতাম। আজ থেকে ১৮ বছর আগে এই সংসদে আমার আসার সুযোগ হয়েছিলো। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, রাজনীতির ছন্দপতনের কারণে হয়তো আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছায় আমি একটি রাজনৈতিক করাগারের মধ্যে ছিলাম। গত ১৮ বছরে যদিও আমি এমপি ছিলাম না বা এইখানে ছিলাম না তবে আমি রাজনৈতিকভাবে চিন্তার দিক দিয়ে নিষ্ক্রিয় ছিলাম না। যদিও জোটগতভাবে বা রাজনৈতিকভাবে বর্তমানে হয়তো আমার নেতাদের সঙ্গে ওই জোটে নাই। কিন্তু আজ থেকে ৫২ বছর আগে যে বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকেই আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মাধ্যমে নির্বাচন করে আপনাদের সকলের দোয়াতে এই জাতীয় সংসদে এসেছি। তিনি বলেন, মহাজোটের বিরোধী যারা ছিলো তারাও আমাকে ভোট দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অনুসারিরা, জাতির পিতার অনুসারিরাও আমাকে ভোট দিয়ে সর্বস্তরের জনগণ আমাকে এখানে পাঠিয়েছে। কারণ আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে। যাই হোক, আজকে সেই ৭ই মার্চে আামি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমি নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি। আমি নিজেকে আজকে এইভাবে সম্মানীত বোধ করি-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙ্গালীদের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন সেই ৭ই মার্চে শপথ নিতে পেরেছি। এসময় তিনি সংসদ নেতা ও স্পিকারের প্রোটেকশন প্রত্যাশা করে বলেন, অনেকের মনো:পুত বক্তব্য হয়তো আমি আজকে নাও রাখতে পারি, তবে আশা করবো আপনার (স্পিকার) কাছে মহাজোটের বিরোধী একজন অন্য জোটের ব্যক্তি হয়ে যাতে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি, জনগণের কথা বলতে পারি, বাংলার মানুষের কথা বলতে পারি, সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে পারি। এবং বঙ্গবন্ধু যে কথা বলেছেন যে জনগণই ক্ষমতার উৎস সেই জনগণের স্বার্থে কথা বলে যাতে সারাজীবন রাজনীতি করতে পারি সেই শেল্টার পাবো বলে আশা করি। সেই সহযোগিতা পাবো বলে আশা করি। এমনকি সংসদ নেত্রীও সেই বিষয়টি বিবেচনায় রাখবেন মনে করি। /আরএ Comments SHARES রাজনীতি বিষয়: