সড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ গণবিরোধী : রিজভী

প্রকাশিত: ২:২৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯

একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মহাসড়ক থেকে টোল আদায়ের যে নির্দেশ দিয়েছেন তার সমালোচনা করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ গণবিরোধী। জনগণের পকেট কাটতেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।

তিনি বলেন, মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা হলে তা যাত্রীদের পকেট থেকেই দিতে হবে, যানজটের তীব্রতা বাড়বে, নষ্ট হবে সময়।

আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, এমনিতে বাস ভাড়া অনেক বেশি। সড়কে টোল আদায় করলে বাস ভাড়া আরও বাড়বে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া পরিবহন মালিকরা নেন না। তারা অনেক বেশি টাকা নেন। এখন টোলের টাকাও যাত্রীদের কাছ থেকে উঠানো হবে। এই টোলের ফলে যাত্রীদের অর্থ অপচয় হবে, সময় অপচয় হবে। ফলে যাত্রীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’

তিনি বলেন, টোল থেকে আদায় হওয়া টাকার কত অংশ সরকারি কোষাগারে জমা পড়বে সেই প্রশ্নও রয়েছে। সরকার নিজেরা টাকা ওঠালে সেখানে দুর্নীতির কারণে নয়-ছয় হয়। আবার ইজারা দিলে খাতিরের লোকজনকে নামমাত্র মূল্যে দেওয়া হয়। ফলে সরকারি কোষাগারে খুব বেশি টাকা জমা পড়ে না। অন্যদিকে টোল প্লাজা পার হতে যদি প্রতিটি গাড়ির পাঁচ মিনিট করেও সময় লাগে তাহলে শুধুমাত্র ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৫ লাখ মিনিট সময় মানুষের জীবন থেকে চলে যাবে। এই এক লাখ গাড়িতে তো অনেক মানুষ চড়েবন। এর পাশাপাশি টোল আদায়ের সময় গাড়ির অতিরিক্ত তেল পুড়লে তার টাকাও আদায় হবে জনগণের কাছ থেকেই। সুতরাং টোলের খড়গ নেমে আসবে জনগনের কাঁধেই। টোলসহ অতিরিক্ত সকল খরচের মাশুল দিতে হবে জনগণকেই।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বর্তমান মিডনাইট সরকার মুখে উন্নয়নের বুলি আওড়ালেও মূলত লুটপাটের নীতিতে দেশ চালাচ্ছে সরকার। জনগণকে নানা ট্যাক্সের মধ্যে বন্দি করে ফেলেছে সরকার। সত্যিকারার্থে এ সরকার সারাদেশে লুটপাট চালিয়ে দেশকে ফোঁকলা করে ফেলেছে।

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা ও নির্যাতন আরো বেড়ে গেছে উল্লেখ করে রাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, বেড়েছে বিএসএফের নৃশংসতার ধরনও। বিশেষ করে দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় আটক বাংলাদেশিদের প্রতি ভয়ংকর নৃশংস আচরণ করেছে বিএসএফ। বিএসএফ বাংলাদেশিদের ওপর যে নিষ্ঠুর আচরণ করছেন তা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, আটক বাংলাদেশিদের বিষয়ে আইন প্রয়োগের সুযোগ থাকলেও তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। সুযোগ পেলেই এদেশের নিরীহ লোকদের ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হচ্ছে। দিন দিন বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যার সংখ্যা বাড়লেও নীরবতা পালন করে আসছে বর্তমান সরকার।

রিজভী আরো বলেন, দুনিয়ার কোনো দেশের সীমান্তে এতো হত্যা ও রক্তপাতের একতরফাভাবে ঘটনা ঘটে না। রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে প্রতিবাদ হলে এসব ঘটনা কমতে পারত। কিন্তু সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্ত নিরাপদ হচ্ছে না। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। আমি সরকারের এ ধরণের ঘৃণ্য নীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বিএনপির এই নেতা বলেন, জামিনে থাকলেও জামিন বাতিল করে আবারো কারাগারে পাঠানো হয়েছে দেশের প্রতিথযশা আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে। আমি এ ঘটনার তীবক্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।

Comments