নবীনদের পদচারণায় মুখরিত বেরোবি ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০১৯

মোঃ আশরাফুল ইসলাম আবির: দেশের দ্রুততম অগ্রসরমান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে অন্যতম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। উত্তর বঙ্গের একমাত্র পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ও এটি।

নারী জাগরণের অগ্রদূত মহসী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতিমধ্যে অতিবাহিত করেছে সুদীর্ঘ এক দশক। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ তম ব্যাচ হিসাবে ২০১৮-১৯ সেশনে শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষার্থীদের পদচারণা।

এবছর পায় ৭০ হাজার ৬ শত ৬৩ পরীক্ষার্থীর মধ্য থেকে সব বিভাগ মিলিয়ে ভর্তি হয় ১ হাজার ৩ শত ১৫ জন। ক্যাম্পাসের সবাই এখন ব্যাস্ত নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচিত হতে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে ভর্তিযুদ্ধে জয়ী যোদ্ধার জন্য বিশ্ববিদ্যালায়ের প্রথম দিনটি বরাবরেই জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠদিন। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সবার মনে শুরু হয় নতুন ক্যাম্পাস নিয়ে নানান স্বপ্ন, আশা আর যত যল্পনা-কল্পনা।

ক্যাম্পাসে প্রথম দিন কীভাবে কাটবে, কী কী করবে-তা নেয়ে প্রস্তুতির শেষ নেই নবীনদের। এদিকে নবীনদের বরণ করে নিতে বসে নেই প্রবীণরাও। তাদেরও পরিকল্পনরর যেন অন্ত নেই। প্রস্তুতির পর দীর্ঘ প্রতিক্ষার মধ্য দিয়ে আসে সেই দিনটি এবং সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে অরিয়েন্টেশনের মধ্য দিয়ে। নানা আয়োজন এবং আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত স্নাতক প্রথমবর্ষ প্রথম সেমিস্টারের অরিয়েন্টেশন ক্লাশ।

গত ৩ মার্চ নবীন বরণের পুরোদিনটি ছিলো উপভোগ করার মতো। উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছিলো পুরো ক্যাম্পাস। নবীন শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে আসতে থাকে তাদের সদ্যপ্রিয় ক্যাম্পাসে। অনেক নবীনের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তাদের অবিভাবকেরাও। সেই সাথে ক্যাম্পাসে এসেছিলো প্রবীনরাও নানা আয়োজনে নবীনদের বরণ করে নিতে। ছেলেরা এসেছিলো পাঞ্জাবি, শার্ট-কোর্ট টাই এবং মেয়েরাও অনেকে এসেছিলো শাড়ী পরে। প্রতিটি বিভাগ আলাদা আলাদা ভাবে পালিত করে তাদের অরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান। নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয় একটি করে গোলাপ, রজনীগন্ধা এবং ক্যালেন্ডার বা অন্যান্য জিনিস দিয়ে।

এসময় শিক্ষকরা তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়সহ স্ব স্ব বিভাগের পরিচিতি। সেই সাথে আহ্বান জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য। এসময় প্রতিটি বিভাগে গিয়ে দেখা এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

তিনি নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিষ্ঠার সাথে তাদের পাঠ্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। নতুন নতুন উদ্ভাবনী জ্ঞানের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং দেশ ও জাতির জন্য নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।

নবীন বরণ শেষে সবাই যখন বেরিয়ে আসে তখনই আনন্দের মাত্রা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। সবার হাতে ফুল, সেই সাথে নতুন বন্ধুদের পেয়ে খশিতে আত্মাহারা। অনেকে ব্যস্ত পরিচিত হতে, আবার কেউ কেউ সেলফি তোলা নিয়ে। অনেকেই আবার বসে গিয়েছিলো আড্ডা দিতে। সবমিলিয়ে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে কেটেছিলো পুরোটা দিন।

ক্যাম্পাসে প্রথমদিনে নবীন শিক্ষার্থী মার্কেটিং বিভাগের ইউসুফ আকাশ, আনিসুর রহমান রাজু, ইংরেজি বিভাগের মোঃ মাহেদুল ইসলাম এবং জিওগ্রাফি এন্ড ইনভারমেন্টাল সাইন্স বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয়। তাদের ভাষ্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে আমরা খুবেই আনন্দিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হতে পেরে আমরা খুবেই গর্বিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহাদয় থেকে শুরু করে বড় ভাই এবং আপুরা অনেক ভালো এবং আন্তরিক। ভালোভাবে জ্ঞান অর্জন করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু বাংলাদেশ নায় সারা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাই। পাশাপাশি যে লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছি সেটা অর্জন করতে চাই।

উল্লেখ্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অকৃত্রিম প্রচেষ্টায় ২০০৮ সালের ১২ অক্টবর রংপুর বিভাগের মধ্যে একমাত্র পুর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে ৩০ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠত হয়।

পরে ২০০৯ সালে নারী জাগরণের অগ্রদূত মহসী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মরণে নাম পরিবর্তন করে ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নামকরণ করা হয়।

/এসএস

Comments