প্রচরণায় আ’লীগ, গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মীরা

প্রকাশিত: ৬:৫১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৮

বাদশা আলম, বগুড়া: দরজায় কড়া নাড়ছে ভোটের দিন। আর মাত্র কটাদিন বাকি।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন উপলক্ষে বগুড়া-৫ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সহ বেশ কয়েকজন প্রার্থী মাঠে নেমেছে ভোট যুদ্ধে। এ আসনে বিএনপির তুলনায় অনেকটাই উজ্জীবিত রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জনগণের কাছে ভোট চেয়ে বিভিন্ন স্থানে ঝুলানো হচ্ছে প্রতীক সম্বলিত পোস্টার।

তবে আওয়ামী লীগের পোস্টারগুলো বেশ নজরে পড়লেও বিএনপির পোস্টার তেমন চোখে পড়ে না। এরই মধ্যে প্রচরণার শুরুর দিকে ধুনটে বিএনপির প্রার্থী জিএম সিরাজের প্রচারণা বহরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে দুবৃত্তরা। পাশাপাশি পুরাতন মামলায় গ্রেফতার আতংকে ঘরছাড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে অধিকাংশ বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এদিকে অনেক এলাকায় বিএনপির প্রার্থী জিএম সিরাজের ধানের শীষ প্রতিক সম্বলিত পোস্টারগুলো দুর্বৃত্তরা ছিড়ে ফেলাসহ আগুনে পুড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শেরপুরের বথুয়াবাড়ি বাজার এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।

তাছাড়া শেরপুর পৌর শহরের বিভিন্ন ড্রেন ও ডাস্টবিনে ধানের শীষের পোস্টার পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৫ শেরপুর-ধুনট আসনে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ।

প্রচারণা ও গণসংযোগে নেতাকর্মীরা ব্যস্ত সময় পার করলেও স্থানীয় দুই উপজেলার মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী জানে আলম খোকার সাথে বর্তমান দলীয় প্রার্থীর জিএম সিরাজের আনুষ্ঠানিক একাত্মতা প্রকাশ না হওয়ায় পিছিয়ে রয়েছে বিএনপি। এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের স্থানীয় পর্যায়েও গ্রুপিং পরিলক্ষিত হলেও উন্নয়নের ধারার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেকটাই উজ্জীবিত রয়েছে এ দলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা মামলার ঘটনা থাকায় গ্রেফতার আতঙ্ক মাথায় নিয়ে ঘরছাড়া রয়েছেন।

নির্বাচনী তফশীল ঘোষনার পরপরই উপজেলার ছোনকা বাজারে নাশকতার ঘটনায় পূর্বের মামলায় থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু ও থানা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হাসানুল মারুফ শিমুলকে আটকপূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। তারপর থেকে বিভিন্ন নেতাদের আটকের তাদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। আর এই কারনেই তারা আটক এড়াতে নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

অপরদিকে বিএনপি সমর্থিত কর্মীরা গত বৃহস্পতিবার সকালে সুতলি (রশি) টাংগিয়ে জিএম সিরাজের ধানের শীষের পোস্টার গুলো দুর্বৃত্তরা বিকেলে ছিড়ে ফেলে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এই নিয়ে এলাকার বিএনপির নেতা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সাধারণ ভোটার জানান, এরকম সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে থাকলে নির্বাচনে ধানের শীষের ফলাফলই ভাল হবে। এছাড়াও এমন ঘটনায় নির্বাচনের শান্তিপুর্ন পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে । এ ব্যাপারে শহর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর জাহিদুর রহমান টুলু বলেন, আমার নামে কোন মামলা নেই তবে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মোহাম্মাদ সিরাজ মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি চা চক্র করেছিলাম। সেই অপরাধে গ্রেফতার আতংকে আমি আজ ঘর ছাড়া। এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছেন তফশিল ঘোষনার পর বিনা দোষে কাউকে আটক করা যাবেনা।

অথচ আমার নামে যে মামলা আছে তার জামিন নেয়া আছে। তার পরেও আমাদের আটক করার জন্য বাড়িতে প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, এজাহারভূক্ত ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে সহকারি রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ লিয়াকত আলী শেখ বলেন, এমন ঘটনার কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে
দেখব।

/সিএইচ

Comments