বান্দরবানে অনুমোদনহীন ইটভাটা; পুড়ছে জ্বালানি কাঠ, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০১৯

নুসিং মারমা, বান্দরবান প্রতিনিধি: বান্দরবানে ড্রাম চিমনির মাধ্যমে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে লাখ লাখ জ্বালানি কাঠ। নষ্ট করা হচ্ছে ফসলি জমি। উজাড় হচ্ছে বনভূমি। এতে মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান ও জলাভূমি এলাকায় ইটভাটা স্থাপন দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বান্দরবানে সদর উপজেলা সহ এমন বেশ কয়েকটি এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা।

বান্দরবানে সদর উপজেলা সহ লামা, আলীকদম, রুমা, রোওয়াংছড়ি উপজেলাগুলোতেও
মার্কার ব্রিকস নামে গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসনের কোনো অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটাটি।

মার্কার ব্রিকস এর দক্ষিণ পাশে ১০ গজ দূরে রয়েছে আরেকটি চর। সেখানে রয়েছে একটি কেওড়াবন। উত্তর পাশে রয়েছে বন বিভাগের সৃজন করা বন। আর বাঁধ-লাগোয়া একটি গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বাস। সেসবে কোনো তোয়াক্কাই করছে না ব্রিকস কর্তৃপক্ষ।

ইটভাটার সমিতির সাথে ব্রিকস অনুমোদন নিয়ে কথা বলতে চাইলেও একুশনিউজ২৪ ডটকম প্রতিবেদকের কোনো প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে পারেনি বান্দরবান ব্রিকস সমিতি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে এলাকার সচেতন বক্তিরা বলছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসকের কোনো অনুমোদন ছাড়াই ইটভাটাগুলো গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়ী সমিতির কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসী বলছেন, ইট পোড়ানোর ফলে এই এলাকার জনস্বাস্থ্য যেমন হুমকির মুখে পড়ছে, তেমনি আশপাশের বনাঞ্চলও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সাথে একবার ইট পোড়াতে প্রায় চার হাজার মণ কাঠ পোড়াতে হয়। এসব কাঠ জোগাড় হচ্ছে আশপাশের সংরক্ষিত বন থেকেই। ফলে উজাড় হয়ে যাচ্ছে গাছপালা। কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ বাড়ছে। পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে।

বান্দরবানে এভাবে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে লোকালয় ও ফসলি জমিতে অনেক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এসব অবৈধ ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। একটা সময় এর পরিণাম হবে ভয়াবহ।

পরিবেশদূষণ করে ও জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলে যারা এভাবে ইটভাটা গড়ে তুলছে, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবেশ আইন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন আরও কঠোর করা ও তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলেও তাগিদ দেন স্থানীয়র।

/এসএস

Comments