এবার হাওলাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করবেন রাঙ্গা নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০১৮ একুশ নিউজ: জাতীয় পার্টির মহাসচিবের দায়িত্ব নিয়েই সদ্য বিদায়ী মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তের কথা বলেছেন মশিউর রহমান রাঙ্গা। রুহুল আমিন হাওলাদার মোটা টাকায় জাপার মনোনয়ন বিক্রি করায় অভিযোগের মুখে পড়েছেন। অভিযোগের মুখে পড়ে দলের মহাসচিব পদ থেকে পদচ্যুতও হয়েছে। সোমবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে ঢাকার বনানীতে দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে এসব কথা বলেন তিনি। এদিকে পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ উন্নত চিকিৎসার জন্য দুই-এক দিনের মধ্যে বিদেশে যাবেন বলেও জানিয়েছেন রাঙ্গা। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এরশাদ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকার মধ্যে তার ও মহাসচিব হাওলাদারের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। এরপর পটুয়াখালী-১ আসনে হাওলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিলের পর সোমবার আকস্মিকভাবেই জাতীয় পার্টির মহাসচিব পরিবর্তনের ঘোষণা আসে। এরশাদ দলীয় চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে হাওলাদারকে সরিয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাঙ্গাকে মহাসচিব করেছেন বলে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায় জানান। রংপুরের এমপি রাঙ্গা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীর বর্তমান সরকারে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি। প রিবহন মালিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতিতে সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন রাঙ্গা। মহাসচিবের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গা মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, এই অভিযোগের প্রসঙ্গে সত্যতা, অসত্যতা রয়েছে। নানা বক্তব্য আছে। ‘আমরা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা গত রাতে আলোচনা করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। তিনি জানান, জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমন্বয় করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশি নিতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি। দলের মনোনয়নপত্র বিতরণের শেষে বেশ কজন নেতা অভিযোগ করেন, মোটা অঙ্কের টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিলেন হাওলাদার। তিনি বলছিলেন, অভিযোগকারীরা কোনো একটি পক্ষ থেকে টাকা খেয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। এই প্রসঙ্গে রাঙ্গা বলেন, মনোনয়ন নিতে এসে যারা লাঞ্ছিত হয়েছেন, যারা টাকা-পয়সা নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন, তারা যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান, তবে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা একটা কমিটি করে দেব। তারপর প্রেসিডিয়াম সদস্যরা তদন্ত করব। দোষী হলে আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। হাওলাদারকে ঠিক কোন কারণে মহাসচিবের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো বক্তব্য জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আসেনি। কিছু স্পষ্ট করে কিছু না বললেও রাঙ্গা বলেন, আপনারা জানেন, ঋণখেলাপি হওয়ার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না। তার মনোনয়ন গৃহীত হয়নি। তবে মাননীয় চেয়ারম্যান তাকে কেন অব্যাহতি দিয়েছেন, তা তিনি বলবেন। হয়তো বা তিনি (হাওলাদার) পদ থেকে অব্যাহতি চাইতে নিজেও বলেছেন। ২০০১ এর নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির তৎকালীন মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে একাংশ দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ‘সন্তানতুল্য ও বিশ্বস্ত’ হাওলাদারকে মহাসচিব করেছিলেন এরশাদ। দলের মধ্যে টানাপড়েনে ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল তাকে সরিয়ে জিয়াউদিদন আহমদ বাবলুকে মহাসচিব করেছিলেন এরশাদ। তবে তিন বছরের মাথায় ২০১৬ সালের ১৯ জানুয়ারি ফের তাকে মহাসচিব পদে ফিরিয়ে আনা হয়। ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের’ অভিযোগ তুলে জাতীয় পার্টির যারা পদত্যাগ করেছেন, তাদের দলের ফিরে আসার আহ্বান জানান নতুন মহাসচিব। রাঙ্গা বলেন, যেসব সাংসদ ও নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন, তাদের বলব আপনারা ফিরে আসুন। চেয়ারম্যান স্যার আপনাদের সন্তানের মতো ভালোবাসেন। পিতাই তো ধমক দেন, অভিমান না করে ফিরে আসুন আপনারা। এ প্রসঙ্গে রাঙ্গা বলেন, জাতীয় পার্টি থেকে তিন বার থেকে বহিষ্কৃত হলেও তিনি দল ছেড়ে চলে যাননি। পরে তিনি রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্ব পান। টানা ১৫ বছর ধরে তিনি দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে রাঙা অভিযোগ করেন, জাতীয় পার্টি সংসদ নির্বাচনের আগে যখন সংগঠিত হয়ে উঠে, তখন দলের মধ্যে একটি অশুভ শক্তি ঢুকে পড়ে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে গেলেও দলটির নেতারা এখনও জানেন না, মহাজোট থেকে তারা কতটি আসন পাবে। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের কথাও জানেন রাঙ্গা। তিনি বলেন, অন্তত তিন মাসে জানা উচিৎ ছিল, কারা আমাদের প্রার্থী হবেন। এখন পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে অর্থকড়ি খরচ করেছেন অনেকে। তাদের মানসম্মানের ক্ষতি হোক, এটা তো আমরা চাই না। এরশাদের অসুস্থতার বিষয়ে জাপা মহাসসচিব জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য দুই-এক দিনের মধ্যে দেশের বাইরে যেতে পারেন পার্টির তাদের চেয়ারম্যান। আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিন যেখানে ১২, স্যারের ১০। তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছেন। আজ সকালেও আমি তাকে দেখে এসেছি। চিকিৎসকরা তাকে দেখছেন। দু একদিনের মধ্যে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারেন। /সিএইচ Comments SHARES রাজনীতি বিষয়: এবার হাওলাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করবেন রাঙ্গামনোনয়ন বাণিজ্যহাওলাদারের বিরুদ্ধে তদন্ত