ঠাকুরগাঁওয়ে ভুল অপারেশনে প্রাণ গেল তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আতিকার

প্রকাশিত: ৪:৫৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৯

মোঃ ইলিয়াস আলী, নিজস্ব প্রতিবেদক: ঠাকুরগাঁওয়ে ভুল অপারেশনে আতিকা (৯) নামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আতিকা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের গোয়ালকারী গ্রামের আতিকুর রহমানের মেয়ে। সে ডাঙ্গী বাজারে বিপ্লব মেমোরিয়াল স্কুলের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী।

শনিবার (২৩ মার্চ) রাতে ঠাকুরগাঁও শহরের এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশন থিয়েটারে এ ঘটনা ঘটে।

অপারেশনের সময় শিশুটিকে অতিরিক্ত এনেসথেসিয়ার (অজ্ঞান) ওষুধ প্রয়োগ করার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ শিশুর বাবা আতিকুর রহমানের। তিনি বলেন অপারেশনের জন্য আমার মেয়েকে অজ্ঞান করলে আর জ্ঞান ফেরাতে পারেনি ওই ক্লিনিকের ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার মনির।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তার পরিবারের লোকজন।

নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, ১৬ দিন পূর্বে স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় ইজি বাইকের ধাক্কায় পা ভেঙে যায় আতিকার। স্থানীয়ভাবে ও ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ১৩ দিন চিকিৎসা করায় তার বাবা আতিকুর রহমান। পরে স্থানীয় হাতুড়ি ডাক্তারের পরামর্শে পায়ের অপারেশন করার জন্য গত তিন দিন আগে ভর্তি করায় শহরের এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।

বুধবার (২০ মার্চ) বিকালে শহরের এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পায়ের অপারেশন করতে অপারেশন থিয়েটারে নেন ওই ক্লিনিকের ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার মনির। প্রায় ৩ ঘণ্টা অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের পর মৃত অবস্থায় বের করে শিশুটিকে।

তবে শিশুটি মারা গেছে এমন কথা না জানিয়েই ক্লিনিক থেকে পালিয়ে যায় ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক দিপু ও এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার মনির। পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও দালাল হাতুড়ি ডাক্তার নানাভাবে বুঝিয়ে শিশুটির মরদেহ তুলে দেয় পরিবারের হাতে।

রবিবার (২৪ মার্চ) দুপুরে এলিজা নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডা. আবু বক্কর সিদ্দিক দিপুর মুঠোফোনে মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খুব ব্যস্ত, এখন অপারেশন থিয়েটারে আছি। আপনি অনুগ্রহ করে বিকালে আমার চেম্বারে এসে কথা বলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল কবির জানান, ঘটনাটি আমার কানে এসেছে। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। কমিটির একজন ওই ক্লিনিক পরিদর্শনও করেছে বলে জানান তিনি।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান জানান, শিশুটির পরিবারের লোকজন থানায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআইজে/

Comments