একাত্তরের বর্বরোচিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি

প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০১৯

একুশ ডেস্ক: নিউইয়র্কে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা স্মরণে ‘গণহত্যা প্রতিরোধ’ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

শুরুতে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত গণহত্যার শিকার মানুষের পবিত্র স্মৃতির উদ্দেশ্যে সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানটিতে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীর বিদেশী অতিথিদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

অনুষ্ঠানটির মডারেটর, প্যানেলিস্ট ও বিষয় বিশেষজ্ঞগণ স্ব স্ব দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণহত্যার উদাহরণ টেনে বলেন যে, বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অবশ্যই হওয়া প্রয়োজন। এই স্বীকৃতি এতদিনেও না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন আলোচকরা।

আলোচনা অনুষ্ঠানটিকে দু’ভাগে বিভক্ত করা হয়। প্যানেল-১ এর শিরোনাম ছিল ‘অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ’ এবং প্যানেল-২ এর শিরোনাম ছিল: ‘ভবিষ্যত গণহত্যা প্রতিরোধ’।

গ্লোবাল সেন্টার ফর দ্য রেসপন্সিবিলিটি টু প্রটেক্ট এর পরিচালক ড. সাইমন অ্যাডামস্ সঞ্চালনা করেন ‘অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ’ আলোচনার। এতে জাতিসংঘে আর্মেনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মহের মার্গারিয়ান, কম্বোডিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত সোভান কে, ক্রোয়েশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ভ্লাদিমির দ্রোবনজ্যাক এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ম্যারিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খুরশেদ আলম অংশ নেন।

প্যানেল আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন তিনি। তার বক্তব্যে উঠে আসে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ এর নামে রাজধানী ঢাকায় পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত নির্মম ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত গণহত্যার কথা।

প্যানেলিস্টগণের আলোচনায় উঠে আসে অতীতের সংঘটিত জেনোসাইডের তথ্য প্রমাণ ও উপাদান থেকে শিক্ষা নিয়ে কিভাবে সামনের দিনগুলোতে গণহত্যার মতো ভয়াবহ ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায় সে বিষয়গুলো।

মিয়ানমার কর্তৃক সংঘটিত রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন ও গণহত্যার কথা উল্লেখ করেন আলোচকগণ। এক্ষেত্রে উদার মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য তারা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।

২৫ মার্চ সোমবার বিকেল ৫টায় শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধি ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষক, থিঙ্ক ট্যাঙ্কসহ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত বিদেশী অতিথিদের উল্লেখযোগ্য সমাগম ছিল।

এফএফ

Comments