স্পোর্টস ডেস্ক: বছরের প্রথম ওয়ানডে ৮ উইকেটের পরাজয় টাইগারদের!এটি ছিলো মাশরাফি নেতৃত্বের সেঞ্চুরিতম ম্যাচ।নিউজিল্যান্ডের নেপিয়ারে সাকিব-রুবেল-তাসকিন বিহীন বাংলাদেশ শুরুতে ব্যাট করে মোঃ মিথুনের ৬২, সাইফুদ্দিনের ৪১, সৌম্যের ৩০ ও মিরাজের ২৬ রানের উপর ভর করে ২৩২ রান করে। মূলত গতি ও কন্ডিশনের কাছেই পরাজিত হয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যানরা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে গাপটিলের শতকে দূর্দান্ত জয় পায় নিউজিল্যান্ড। মিরাজ ও রিয়াদ নেন ১টি করে উইকেট। অধিনায়ক মাশরাফিও দারুন বোলিং করেছেন উইকেট না পেলেও ৮.৩ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন মাত্র ৩৩ রান।

টসে জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। সদ্য সমাপ্ত বিপিএলের ফাইনালে ১৪১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা তামিম ইকবাল মাত্র ৫ রানে সাজঘরে ফিরে যান।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন এই ওপেনার। খানিক পর ১ রানে ক্রিজে ব্যাট করা অবস্থায় ম্যাট হেনরির ভেতরে আসা বলে বোল্ড হন আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাস।

শুরুতে দুই ওপেনারকে হারালেও মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে দারুণ খেলছিলেন সৌম্য সরকার। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক মনোভাবে খেলে দ্রুত রান তোলার কাজটা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

কিন্তু দলীয় ৪২ রানে ট্রেন্ট বোল্টের ইনসুইং বলে ৫ রানে বোল্ড হন মুশফিক। এরপরের ওভারে ম্যাট হেনরিকে পুল করতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন সৌম্য। ২২ বলে ৩০ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশের হাল ধরার চেষ্টায় ব্যাট করছিলেন রিয়াদ এবং মিথুন। দুজন মিলে জুটিতে যোগ করেছিলেন ২৯ রান। কিন্তু দলীয় ৭১ রানের সময় ফারগুসনের বলে বিদায় নেন রিয়াদ।

খানিক পর সাব্বির রহমানকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মিচেল স্যান্টনার। ২০ বলে ১৩ রান করেন এই ব্যাটসম্যান। ৯৪ রানে ৬ উইকেট হারালেও মিথুন এবং মিরাজ মিলে দলের হাল ধরেন। তবে মিচেল স্যান্টনারের অফ সাইডের বলকে লেগ সাইডে সুইপ করতে গিয়ে ২৬ রানে উইকেট ছুঁড়ে দেন মিরাজ।

৭ উইকেট হারিয়ে দলের বিপর্যয়ে দারুণ এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। একপ্রান্তে থিতু হয়ে ব্যাট করতে থাকেন তিনি। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের সঙ্গে ইতিমধ্যে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন এই ব্যাটসম্যান। দেখে শুনে খেলে ৭৩ বলে ৫০ তুলে নিয়েছেন মিথুন।

তাঁকে ভালো মতই সঙ্গ দেন সাইফুদ্দিন। কিন্তু এই দুজনের জুটিতে বাধা হয়ে দাঁড়ান স্যান্টনার। ৪১ রানে সাইফুদ্দিনকে ফিরিয়ে তাঁদের ৭৯ রানের জুটি ভাঙ্গেন এই স্পিনার। এর খানিক পর ৯০ বলে ৬২ রান করা মিথুনকে বোল্ড করেন ফারগুসন।

এরপর আর বেশীক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা। ২৩২ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ট্রেন্ট বোল্ট ৪০ রান দিয়ে ৩টি এবং স্যান্টনার ৪৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।

স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ২৩৩ রানের সহজ লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে।মাঝারি টার্গেটে মার্টিন গাপটিল ও হেনরি নিকোলাস দেখে শুনে খেলতে থাকতে।দুজনের মিলে সেঞ্চুরি প্লাস পার্টনারশিপ গড়ে তুলে তখন মেহেদী হাসান মিরাজ অ্যাটাকে আসে এবং জুটি ভাঙ্গে গাপটিল,নিকোলাসের।নিকোলাস ৮০ বলে ৫৩ রান করে ফিরে যান। তার পর ক্রিজে আসেন কিউই ক্যাপ্টেন কেন উইলিয়ামসন। তবে উইলিয়ামসনকে বেশিক্ষন টিকতে দেননি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।১৩৭ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয়।ক্রিজে আসেন রস টেইলর। টেইলর, গাপটিল দুজন মিলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌছে দেন অনায়াশে। সঙ্গে গাপটিল তুলে নেয় তার ক্যারিয়ারের ১৫ তম সেঞ্চুরিটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

বাংলাদেশ:-২৩২-১০
(মিথুন ৬২,সাইফুদ্দিন ৪১)
(বোল্ট ৩-৪০,স্যান্টনার ৩-৪৫)

নিউজিল্যান্ড:-২৩৩-২(৪৪.৩)
গাপটিল ১১৭,নিকোলাস ৫৩,টেইলর ৪৫)
(মাহমুদুল্লাহ ১-২৭,মিরাজ ১-৪২)

/নয়ন/আরএ

Comments