
বিল্লাল হোসেন,যশোর প্রতিনিধি: যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির বাগডাঙ্গা সরদারপাড়ায় গৃহবধূ রিপা (২২) হত্যা মিশনে স্বামী শাশুড়ি ছাড়াও আরো দুই তিন জন জড়িত বলে তথ্য উদঘাটন করতে পেরেছে পুলিশ। কিন্তু ওই সময় তারা মামলার বাইরে থেকে গেছে।
ঘটনার পর থেকে তারা এলাকা ছাড়া। মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি তাদের সহযোগিতা নিয়েই রিপাকে শ্বাসরোধে খুন করে। এমনটা আভাস দিয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পরিদর্শক হারুন অর রশিদ।
এদিকে, ধানক্ষেত থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের ১ মাস ১৭ দিন পর হলেও মামলার দুই আসামি রিপার স্বামী ইমরান ও শাশুড়ি শাশুড়ি রিজিয়া বেগম ওরফে সুন্দরী রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সন্দেহভাজন হিসেবে আটক রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে খুন সম্পর্কে পুলিশ কোন তথ্য বের করতে পারেনি। তবে মৃতদেহ উদ্ধারের আগের দিন রিপার সাথে মুঠোফোনে রফিকুলের ২১ মিনিট কথপকথন হয়েছিলো বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
জানা গেছে, রিপা হত্যা মামলায় প্রথমে তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচাজ এসআই সুকুমার কুন্ডু। তিনি ১১ এপ্রিল বাগডাঙ্গার রফিকুলকে সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল এলোমেলো কথা বলে। পরে প্রযুক্তি ব্যবহারে পুলিশ নিশ্চিত হয় রফিকুল ইসলাম ও রিপার সাথে গত ১ এপ্রিল থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ১৬ বার মুঠোফোনে কথা হয়েছিলো।
এর আগে মার্চ মাসে ৩০ বার কথা হয়। আর যেদিন রিপা নিখোঁজ হয়েছিলো সেদিন তার সাথে রফিকুলের সর্বশেষ কথা হয় ২১ মিনিট। যে কারণে সন্দিহভাজন আসামী করে তাকে রিপা খুনের মামলায় আদালতে চালান দেয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুকুমার কুন্ডু।
সূত্র জানায়, মামলার তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় গত সপ্তাহে রিপা খুনের মামলাটি তদন্তভার এসে পড়ে সিআইডি পুলিশের কাছে। বর্তমানে সিআইডি পরিদর্শক হারুন অর রশিদ মামলাটি তদন্ত করছেন।
তিনি জানান, মামলাটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। মামলার বাইরে আরো দুই তিন জন এই খুনের সাথে জড়িত বলে তথ্য মিলেছে। এজাহার নামীয় দুই আসামিকে আটকের জন্য জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তারা আত্মগোপনে রয়েছে। ইমরান ও তার মা সুন্দরীকে আটক করতে পারলেই খুনের রহস্য উদঘাটন ও অন্য খুনিদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য মিলবে। তাদের অবস্থান নিশ্চিত হতে নানাভাবে চেষ্টা চলছে। তবে দ্রুত তাদের আটক করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ৭ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলো গৃহবধূ রিপা। ৮ এপ্রিল বিকেলে তার মৃতদেহের সন্ধ্যান মেলে বাগডাঙ্গা সরদারপাড়া বিল সংলগ্ন একটি ধান ক্ষেতে। সেখানে এই গৃহবধূ বিবস্ত্র অবস্থায় পড়ে ছিলেন। এই ঘটনায় নিহতের পিতা ঝিকরগাছা উপজেলার বিষেহরি গ্রামের মোশারফ মিয়া বাদি হয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নিহতের স্বামী বাগডাঙ্গা গ্রামের ইমরান ও শাশুড়ি রিজিয়া বেগম ওরফে সুন্দরীসহ অজ্ঞাত দুই তিনজনকে আসামি করা হয়।
মামলায় বলা হয়, ২য় বিয়ের ঘটনা জানার পর প্রতিবাদ করায় ক্ষিুব্ধ স্বামী ইমরান তার মা সুন্দরীসহ অজ্ঞাত আসামীদের সহায়তায় রিপাকে নৃসংশ্যভাবে খুন করেছে।
এমএম/