কুড়িগ্রামে পুলিশ সুপার পরিচয়ে ওসিকে ফোন, অভিনব প্রতারণায় আটক ১

কুড়িগ্রামে পুলিশ সুপার পরিচয়ে ওসিকে ফোন, অভিনব প্রতারণায় আটক ১

প্রকাশিত: ৬:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৩

কুড়িগ্রামে পুলিশ সুপার সেজে অভিনব প্রতারণা, গ্রেফতার ১

কুড়িগ্রামে অভিনব পদ্ধতিতে প্রতারণার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটককৃত ব্যক্তি নিজেকে কখনো পুলিশ সুপার আবার কখনো অফিসার ইনচার্জ পরিচয় দিয়ে করতেন অভিনব প্রতারণা।

প্রথমে জেলা পুলিশ সুপার সেজে থানায় ফোন করে কর্মরত ডিউটি অফিসারের কাছ থেকে বিভিন্ন মামলা ও অভিযোগের তথ্য নিয়ে পরে ফোন করা হতো বিভিন্ন বিষয়ে থানায় অভিযোগকারীদের। ভুক্তভোগীদের ফোন দিয়ে অফিসার ইনচার্জ পরিচয় দিয়ে চেয়ে নিতেন মামলার পরিচালনার জন্য উৎকোচের টাকা। এমনকি থানার এক কর্মকর্তাকেও বোকা বানায় ওই প্রতারক।

পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ তুলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া বিভাগ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ০৫ নভেম্বর (শনিবার) বিকাল আনুমানিক ৪টায় নাগেশ্বরী থানার ডিউটি অফিসার এর সরকারি মোবাইল ফোনে জনৈক প্রতারক নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে থানার সার্বিক অবস্থা জানতে চায় এবং থানায় কতটি অভিযোগ সকাল থেকে দায়ের হয়েছে সে বিষয়ে তথ্য জানতে চায়।

একপর্যায়ে অভিযোগকারীদের নাম এবং মোবাইল নাম্বার জানতে চাইলে দ্বায়িত্বরত এএসআই সরল বিশ্বাসে সকল অভিযোগকারীর নাম এবং মোবাইল নাম্বার উক্ত পুলিশ পরিচয়ধারী ব্যক্তিকে দেন। একই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টায় একজন অভিযোগকারী নাগেশ্বরী থানার মুন্সির নিকট এসে বলে ওসি স্যার ফোন করেছিল খরচের টাকার জন্য। একবার ২ হাজার টাকা বিকাশ করলাম আবার টাকা চাচ্ছে।

বিষয়টি মুন্সির সন্দেহ হওয়ায় যে নাম্বার থেকে কল করা হয়েছিল সে নম্বরে কল দিতে থাকে। অপর প্রান্ত থেকে বারবার কল কেটে দেয়। একপর্যায়ে কল ব্যাক করে অফিসার ইনচার্জ এর ন্যায় কন্ঠে মুন্সিকে বলে ‘এই মুন্সি বারবার কেটে দিচ্ছি তবু কল দিচ্ছ কেন, রেখে দাও’। এরকম ঝাঁঝালো কন্ঠ শুনে মুন্সিও বিপাকে পড়ে যায়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসার ইনচার্জ থানায় আসলে মুন্সি জিজ্ঞেস করে স্যার আপনি আমার সঙ্গে কথা বললেন না? তখন
অফিসার ইনচার্জ না বলেন এবং ঘটনা জানতে চান। অফিসার ইনচার্জ তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি একটি অভিনব প্রতারণার ঘটনা বুঝতে পেরে ০৫ নভেম্বর থানায় সকল অভিযোগকারীর মোবাইল নাম্বারে কল দিতে বলেন।

অভিযোগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের পর জানা যায়, তিনজন অভিযোগকারী একই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং একইভাবে কল এবং একই বিকাশে টাকা দিয়েছেন মর্মে জানান। পরে মোবাইল নম্বার এবং বিকাশ নাম্বার এর সূত্র ধরে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে মূল আসামী নাগেশ্বরী বামনডাঙ্গা এলাকার মো: আতানুর রহমানকে গ্রেফতার করে।

কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মো. রুহুল আমীন বলেন, প্রতারক চক্রটি অভিনব কৌশল অবলম্বন করে কয়েকজন সম্মানিত নাগরিকদের কাছথেকে বিকাশ এর মাধ্যমে টাকা নিয়েছিলো। পরবর্তীতে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ প্রতারক চক্রটির মূলহোতাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এর সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা এই বিষয়ে তদন্ত ও অভিযান চলমান রয়েছে।

নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, মামলা, জিডি বা অভিযোগের ক্ষেত্রে পুলিশকে কোনো প্রকার টাকা দিতে হয় না। কোনো প্রতারক চক্র টাকা দাবি করলে দ্রুত স্থানীয় থানায় জানানোর অনুরোধ করছি।

Comments