বাবার বিরুদ্ধে শিশু কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ; খুলনায় নিন্দার ঝড়

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮

শেখ নাসির উদ্দিন, খুলনা প্রতিনিধি: খুলনায় আপন পিতা কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হলো তারই ১২ বছরের শিশু কন্যা।

আসামী খুলনা মহানগরীর গ্রীনল্যান্ড আবাসনের ডি ব্লকের ৫নং মাছ ঘাট এলাকার বাসিন্দা মো: ঝন্টু শেখ (৪০)। খুলনা রেলের কর্মাশিয়াল রোডের লেবারের কাজ করে ঝন্টু।

নগরীর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যানত দমন আইনে ৯ এর ১ ধারায় গতকাল মামলা করেন আসামীর স্ত্রী বিউটি বেগম (মামলা নং ২৮)।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে মুঠোফোনে খুলনা থানা পুলিশ মামলার এজাহারের আভিযোগকারীর বরাত দিয়ে জানান, আসামী তার দৈনিক কাজ শেষে রাতে দুটি জুস নিয়ে বাসায় আসে এবং স্ত্রীর ও মেয়েকে খাওয়ায়। তার স্ত্রীর ধারনা ঐ জুসেই ঘুমের ঔষধ মেশানো ছিলো।

পরে রাত আনুমানিক আড়াইটায় সে তার মেয়ের ঘরে প্রবেস করে ধর্ষন করে। এক পর্যায়ে মেয়ে চেতনা ফিরে পেলে বাধা দেয় এসময় ঝন্টু তাকে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। ঘুমের ঔষুধ খাওয়ায় কিছুই টের পায়নি বিউটি বেগম। সকালে আনুমানিক ৬টায় বন্যা (ছদ্দনাম) তার মাকে রাতের ঘটনা বলে দেয়।

এ ব্যপারে বিউটি বেগম মুঠোফোনে বলেন, আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করি, সৎ বাবা হলেও কথা ছিলো। নিজের এতটুকু বাচ্চা মেয়ের সাথে এমন জঘন্য কাজ কিভাবে একজন বাবা করতে পারে। আমার আরও ছোট ছোট দুটি মেয়ে আছে। তাকে ছাড় দিলে পরবর্তিতে তাদের সাথে এমন করবে না তা কে জানে।


কান্নামুখে বিউটি বলেন, আমি নিজের সুখের দিকে তাকিয়ে এমন জঘন্য ব্যক্তিকে ক্ষমা করতে পারি না। প্রয়োজনে আমি ভিক্ষা করে বাচ্চা গুলোকে মানুষ করব। সমাজের নানা রকম কথাও শুনতে হচ্ছে। মেয়েটি এখন ভিকটিম সার্পোট সেন্টারে আছে। তার ডাক্তারী পরীক্ষা হবার কথা রয়েছে।

ঝন্টু প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সে প্রায়ই মদ খেয়ে বাসায় আসে। জুয়াও খেলে। নিয়মিত রাত বারোটা একটা নাগাত বাড়ি আসে। এমনকি মাঝে মাঝে আমাকে মারধোর করতো।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খুলনা প্রেস ক্লাব সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, এমন ঘটনাকে সামাজিক অবক্ষয় বলা যাবে না। কারণ এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে এমন পৈশাচিক ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়।

একমাত্র ধর্মীয় অনুশাসন, পারিবারিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তিনি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের মহাসচিব জিএম সজিব মোল্লা এই ঘটনায় বিস্ময় ও হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, সামাজিক অবক্ষয়ের এমন করুণ পরিস্থিতি ব্যক্ত করার ভাষা আমার জানা নেই। এটা একটা পৈশাচিক কাজ। একে পশুর সাথে তুলনা করা হয়।

মানুষ যখন মনুষত্ব হারিয়ে ফেলে তখন সে বাঘের চেয়েও হিংস্র হয়ে যায়। তখন সে আর মানুষ থাকে না। আমি ওই নরপিশাচের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি, যাতে সমাজে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

/সিএইচ

Comments