ভোট বর্জন নয়; শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবে ঐক্যফ্রন্ট নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮ একুশ ডেস্ক: বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনটি ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছিল নানা কারণে। বিএনপি, তথা ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জন করতে পারে, এমন কথা শোনাযাচ্ছিল কয়েকদিন ধরে। বিশেষ করে মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর এই আলোচনা আরো জেরালো হয়৷ বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কেউ কেউ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের আগে জরুরি বৈঠকে নির্বাচনে থাকার পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফ্রন্ট নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণই দেশের মালিক৷ তাঁরা প্রজা নয়৷ জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হবে। বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন জীবন দিয়েছেন। তাঁদেরকে আমরা স্মরণ করি শ্রদ্ধার সঙ্গে। ১৪ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর তাঁদের আমরা শ্রদ্ধা জানাই। আজকের এই নির্বাচন হলো তাঁদের স্বপ্নকে বাস্তবয়ানের নির্বাচন। আজকে আমাদের ঐক্যের ভিত হলো, স্বাধীনতার শহীদদের স্বপ্ন। সংবিধানে শহিদদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য এই নির্বাচন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা যেমন বিজয় অর্জন করেছি, তেমনি ৩০ ডিসেম্বরও আমাদের বিজয় হবে। তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হলে উন্নয়ন অর্থবহ হয় না। আমরা সবাই মিলে ভোটের বিপ্লব ঘটাবো। যারা অহংকারের সুরে কথা বলেন এবং যদি মনে করেন তারা দেশের মালিক, এটা ভুল হবে। দেশের মালিক কেউ না, দেশের মালিক দেশের ১৬ কোটি মানুষ। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন অর্থবহ হয় না। ১০ পার্সেন্ট প্রবৃদ্ধি দিয়ে উন্নয়ন হয় না। এই ধরনের উন্নয়নের কথা আইউব খান বলতেন। উন্নয়ন হলো সবার জন্য৷ কাদের উন্নয়ন হয়েছে তা আপনারা জানেন। তিনি যে-কোনো পরিস্থিতিতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র এবং বিএনপি’র মহসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সরকারের ইতোমধ্যে নৈতিক পরাজয় হয়েছে। আওয়ামী লীগকে প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। পাপের কাছে নতি শিকার না করে, ৩০ ডিসেম্বর জনগণকে তাঁদের মুক্তির জন্য, নিজেদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা জন্য এবং গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য ধানের শীষে ভোট দিন। তিনি গণমাধ্যমকে কারো কাছে নতি শিকার না করে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরীসহ আরো অনেকে। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘অব্যাহত নিপীড়ন এবং হামলার কারণে বিএনপির নেতা-কর্মী এবং প্রার্থীরা ভোটের মাঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না। প্রার্থীদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে৷ কেউ তো আর জীবন শেষ করে নির্বাচন করতে চান না। তাই নির্বাচন থেকে সরে আসার মত আসছিলো বিভিন্ন প্রার্থী ও নেতাদের কাছ থেকে। কিন্তু আমরা দেখলাম, জনগণ যে-কোনো পরিস্থিতিতে ভোট দিতে চায়। তাঁরা ভোট দেবেন। তাই আমরা নির্বাচনেই থেকে গেলাম। তিনি বলেন, এই সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই। তাই তারা সরকারি বাহিনীকে মাঠে নামিয়ে অত্যাচার, নির্যাতন ও গ্রেপ্তার চালাচ্ছে৷ আর এতে প্রমাণিত হয় সরকার ভয় পেয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর আমরা জয়ী হবো। সাধারণ মানুষ যেভাবে হোক আমাদের ভোট দেবে। তিনি আরো বলেন, আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচনে আমাদের অংশগ্রহণ৷ তবে আমরা ৩০ তারিখে জয় নিয়েই ঘরে ফিরবো। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখনো নির্যাতন এবং ধরপাকড় অব্যাহত আছে। আমাদের ৫ হাজার পোলিং এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্ট থাকবে না। কিন্তু আশার জায়গা হলো, জনগণ এবার ভোট দিতে যাবে। তাঁদের ঠোকানো যাবে না। আর তাঁরা ভোটকেন্দ্রে গেলেই আমরা জয়ী হবো। তিনি আরো বলেন, ‘তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। একের পর এক প্রার্থীর ওপর হামলা করছে, যা পরিবেশকে ভীতিকর করে তোলে। নির্বাচনের পরিবেশ নেই। কিন্তু আমাদের আশা, এই পরিস্থিতিতেও জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাবে। সূত্র: ডয়েসে ভেলে। /এসএস Comments SHARES নির্বাচন বিষয়: