ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনা আটক ১

প্রকাশিত: ১১:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০১৯

একুশ ডেস্ক: নোয়াখালীর সুবর্ণ চরে ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় ভোটের দিন রোববার রাতে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় ১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, ভোটের দিন নোয়াখালীতে ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় এক সিএনজিচালকের বাড়িতে গিয়ে স্বামী সন্তানকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা।

ভুক্তভোগি গৃহবধূ জানায়, চর জুবিলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুহুল আমীনের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একদল আওয়ামী লীগ কর্মী রোববার রাতে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার স্বামী সিএনজি চালক সিরাজ ও সন্তানদের বেঁধে ঘরের বাইরে এনে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

প্রভাবশালী ইংরেজী দৈনিক ‘দ্য ডেইলি স্টার’ জানায় রুহুল আমীনের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে, তিনি সুবর্ণচর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন জানিয়ে অভিযোগ অস্বীকার বলেন, ওই নারী আমার আত্মীয় এবং তাদের মধ্যে কোনো শত্রুতা নেই। ভোটকেন্দ্রে কেবল একবার আমি তার (নারী) সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।

ধর্ষিতার স্বামী সিএনজিচালক সিরাজ বলেন, রোববার (৩০ ডিসেম্বর) তার স্ত্রী কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী সোহেল, আলাউদ্দিন, স্বপন, আনিস, আনোয়ার, আবু মাঝি, হেদু মাঝিসহ কয়েকজন তাকে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বলে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সবার সামনে তার স্ত্রী ধানের শীষে সিল দেয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।

সিরাজ জানান, এরপর রাত ১০টার দিকে অভিযুক্তর তার বাড়িতে এসে পুলিশ পরিচয়ে দরজা খুলতে বলে। দরজা খুললে তারা ঘরে ঢুকে সিরাজের হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে। এরপর তার স্ত্রীকে (৩০) ঘরের বাইরে নিয়ে যায় এবং রাতভর গণধর্ষণ করে।

পরের দিন সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে উলঙ্গ অবস্থায় ঘরের পাশে ফেলে যায়। পরে এলাকাবাসী তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে এবং অজ্ঞান অবস্থায় বেলা সোয়া ১২টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসক আনোয়ারুল আজিম জানান, ধর্ষিতাকে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে গণধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। হাসপাতাল তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছে।

পরে এই ঘটনায় ধর্ষিতার স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে চরজব্বর থানায় মামলা করেন। 

নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার ইলিয়াছ শরীফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ধর্ষনের ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ এজাহারভুক্ত একজনকে গ্রেফতার করেছে।

তবে এটা কোন রাজনৈতিক ঘটনা নয় জানিয়ে তিনি দাবি করেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। এসময় বাকী আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি। 

/এসএস

Comments