সুপার ওভারে চিটাগাং এর অবিস্মরণীয় জয় নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০১৯ নয়ন চৌধুরী, ক্রীড়া প্রতিবেদক: ১২ জানুয়ারি শনিবার খুলনা-চিটাগাং ম্যাচে টসে জয়লাভ করে চিটাগাং ক্যাপ্টেন ডিপেন্ডেবল মুশি। টস জিতে চিটাগাং ক্যাপ্টেন খুলনাকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রন জানায়। বরাবরের মতো ওপেনার হিসেবে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান জুনায়েদ সিদ্দিকী ও আইরিশ ব্যাটিং অল-রাউন্ডার পল স্টার্লিং আসে ক্রিজে।ভাইকিংসের হয়ে বোলিং অপেন করতে আসে ফ্রাইলিংক। ফাইলিংক প্রথম বলে ওয়াইড দিয়ে শুরু করে। তারপর শুরু হয় খুলনার ব্যাটিং ঝড় প্রথম ওভারে ফ্রাইলিংককে মেরে দলীয় ১৩ রান সংগ্রহ করে। খুলনার ব্যাটিং ঝড়ে যখন চিটাগাং এর দুই বোলার কুপোকাত তখন চিটাগাং কে ব্রেক থ্রু এনে দেয় চট্টগ্রামের সন্তান তরুণ অল-রাউন্ডার নাঈম হাসান। আউট হয় উড়তে শুরু করা পল স্টার্লিং। উইকেট যাওয়ার সময় খুলনার সংগ্রহ ২.৩ ওভারে ৩১ রান। তারপর রান তোলার গতি কমে যায় খুলনার। দলীয় ৪১ রানের সময় ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিকী আউট হয়।তারপর ক্রিজে আসে খুলনা ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ। দলীয় ৪১ রানে ২ উইকেট যাওয়ায় কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যায় খুলনা। তখন ক্যাপ্টেন রিয়াদ, মালানকে নিয়ে দলের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে দুজনে মিলে ৭১ রানের একটি পার্টনারশিপ গড়েন। রিয়াদ ও মালানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে যখন ভাইকিংস বোলার দিশেহারা তখনই বাংলাদেশের তরুণ পেসার আবু জায়েদ রাহী আসে ১৬ তম ওভার করতে। ওভারের প্রথম বলেই মালানকে আউট করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখায় রাহী। খুলনার দলীয় সংগ্রহ তখন ১১৮ রানে ৩ উইকেট। তারপর মাঠে আসে ক্যারিবিয়ান অল-রাউন্ডার কার্লোস ব্রাথওয়েট। ব্রাথওয়েট ক্রিজে এসেই চড়াও হয় রাহীর উপর। রাহীর করা ওভারের ৫ বল থেকে সংগ্রহ করে ১২ রান। তার পরের ওভার (১৭তম ওভার) করতে আসে সানজামুল ইসলাম। সানজামুল প্রথম বলটি ওয়াইট দেয়। পরের বলেই বিপদজনক হওয়ার অাগেই ব্রাথওয়েটের উইকেটটি তুলে নেয়। উইকেট নেওয়ার মাঝেই ব্রাথওয়েট ও ক্যাপ্টেন রিয়াদ তাদের স্টাইকিং পজিশন পরিবর্তন করায় ওভারের দ্বিতীয় বলটির মুখোমুখি হয় রিয়াদ এবং একটানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে ভাইকিংস শিবিরে স্বস্তির মাত্রাটা অারো বাড়িয়ে দেয় সানজামুল। তখন খুলনার দলীয় সংগ্রহ ১৩২ রানে ৫ উইকেট। তারপর শান্ত, আরিফুল,মাহিদুলের সংগ্রহ মিলে খুলনা ১৫১ রান সংগ্রহ করে ৬ উইকেট হারিয়ে। ভাইকিংসের সামনে টার্গেট দেয়া হয় ১৫১ রানে। ইনিংস বিরতি শেষে মাঠে নামে ভাইকিংসরা। শাহজাদ ও ডেলপোর্ট ক্রিজে অাসে ইনিংস অপেন করতে। কিন্তু তাদের জুটি আলোর মুখ দেখবে দেখবে করে ১২ রানেই পাকিস্তানি বোলার জোনায়েদ খান ভাইকিংস শিবিরের শাহজাদকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখায়। ডেলপোর্ট বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলিকে নিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয়। তারপর ডেলপোর্ট তাইজুলের স্পিন ফাঁদে পড়ে আউট যায়। তখন ভাইকিংসের দলীয় রান ২ উইকেটে ৫১ রান। ভাইকিংস যথাক্রমে ৮৬,৮৭,১১৯,১২১ রানে উইকেট হারায়। যখন ভাইকিংসের ১২১ রান তখন তাদের উইকেট নেই ৬ টি। তবে শেষ উইকেটটি পড়েছিলো ক্যাপ্টেন মুশির। তারপর ক্রিজে আসে তরুণ অল-রাউন্ডার নাঈম হাসান। অপর প্রান্তে ব্যাটিংয়ে ছিলো ফ্রাইলিংক। ঘটনাটি ১৮ তম ওভারের ছিলো। তারপর ১৯ তম ওভার করতে আসে পাকিস্তানি পেসার জুনায়েদ খান। তখন ভাইকিংসের প্রয়োজন ছিল ১২ বলে ২৩ রান। তবে জুনায়েদের খানের ওভার থেকেই শুরু হয় ম্যাচের মোড় ঘুরানো একবার ভাইকিংসের দিকে একবার খুলনার দিকে। ১৯ তম ওভারে জোনায়েদ বুদ্ধিমত্ত্বার সাথে বোলিং করে যার ফলে ভাইকিংসের খেলোয়াড় নাঈম,ফ্রাইলিংক ৪ রান তুলতে সক্ষম হয়। ভাইকিংসের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৯ রান। বল করতে আসে বাংলাদেশী অল-রাউন্ডার আরিফুল ইসলাম। প্রথম বল নাঈমকে ডট দেয় আরিফুল। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে নাঈম জানান দেয় চট্টলা এখনো ম্যাচে আছে। তখন ভাইকিংসের প্রয়োজন ৪ বলে ১২ রান। তবে তৃতীয় বলে ঘটে অঘটন। তৃতীয় বলে নাঈমকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখায় আরিফুল। বল কমে হয় তিন। রান লাগে ১২। চতুর্থ বলের সময় স্টাইকিং প্রান্তে ছিল ফ্রাইলিংক। ফ্রাইলিংক চতুর্থ বলে ছক্কা মেরে দলের জয়ের আশাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। তারপর ভাইকিংসের প্রয়োজন ২ বলে ৭ রান। পঞ্চম বলেও ছক্কা মারে ফ্রাইলিংক। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ টাই করে ফ্রাইলিংক। ভাইকিংসের জিতার জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ১ রান। তবে শেষ বলে যে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে তা কেই বা জানতো। শেষ বলে ফ্রাইলিংকে রান আউটের ফাঁদে ফেলে ম্যাচটি টাই করে খুলনার ক্যাপ্টেন উইকেটকিপার মাহিদুল ইসলাম। তারপর ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারে অাগে ব্যাটিং করতে আসে চিটাগাং ভাইকিংস। চিটাগাং এর হয়ে ক্রিজে আসে ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও রবি ফ্রাইলিংক। বল করতে আসে পাকিস্তানি বোলার জোনায়েদ খান। জোনায়েদ খানের প্রথম বলটি ডেলপোর্ট ৪ মারে। দ্বিতীয় বলে সিংগেল। তৃতীয় বলে ফ্রাইলিংক স্ট্রাইকে। তৃতীয় বলেও ফ্রাইলিংক ৪ মারে। চতুর্থ বলে ফ্রাইলিংক ক্লিন বোল্ড হয়। তারপর ক্রিজে আসে ভাইকিংস ক্যাপ্টেন মুশফিকুর রহিম। মুশি পঞ্চম বলে ১ রান নেয়। ষষ্ঠ বলে ডেলপোর্ট ১ রান নেয়। সুপার ওভারে খুলনাকে ১২ রানের টার্গেট দেয় চিটাগাং টিম। খুলনার হয়ে ব্যাটিং করতে আসে হার্টহিটার ব্রাথওয়েট ও মালান। শতকরা ৭০% সমর্থকের ধারনা ব্রাথওয়েট-মালান জুটিকে এত রানে আটকানো যাবে না। এমন সমীকরণ নিয়ে ফ্রাইলিংক আসে বোলিংয়ে। প্রথম বলে ব্রাথওয়েট ১ রান নেয়। দ্বিতীয় বলে মালান ৪ মারে। তৃতীয় বলে মালান ডাবল নেয়। প্রথম ৩ বলে ৭ রান নিয়ে খুলনা শিবিরে তখন খুশির অামেজ। কে জানত চতুর্থ বল থেকে শুরু হবে ম্যাচ রেজাল্ট উলট-পালট। চতুর্থ বলে রান আউট। পঞ্চম বলে স্টালিং এর ব্যাট থেকে ডাবল। খুলনার জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ৩ রান। কিন্তু তারা ১ রান নিতে পারে এবং রান অউটও আসে ষষ্ঠ বল থেকে। সবশেষে এত ঘটনার পর সুপার ওভারে জয় পায় চিটাগাং ভাইকিংস। /এসএস Comments SHARES খেলাধুলা বিষয়: