বালিয়াকান্দিতে ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০১৯

অনিক সিকদার, বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি: ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি শাখার ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ইন্সুরেন্সের গ্রাহকরা।

গ্রাহকের তথ্য পরিবর্তন করে সব গ্রাহকদেরই একই পেশা লিখে সদস্য অন্তর্ভূক্ত করে। গ্রাহকের মূল পেশা পরিবর্তন করে বেশির ভাগ গ্রাহকের পেশাই রাখি মালের ব্যবসা লিখে ফরম পূরণ করে। আর এতে বীমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর টাকা পেতে গ্রাহকের চরম ভোগান্তির সম্মুখিন হতে হচ্ছে।

গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে এর সতত্য পাওয়া যায়। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুর রহমান ফারুক।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেশির ভাগ আবেদন ফরমই ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুর রহমান ফারুকের নিজ হাতে লেখা।

মাগুরা জেলার জাগলার চাপড়া গ্রামের মৃত আঃ মজিদ বিশ্বাসের ছেলে বি এম এমদাদুল হক। তিনি ২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডে বীমার জন্য আবেদন করেন।

সেই আবেদনটি ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুর রহমান ফারুকের নিজ হাতে লেখা। তাতে এমদাদুল হকের পেশা দেখানো হয়েছে রাখি মালের ব্যবসা। আর শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখানো হয়েছে ১০ম শ্রেণি। অথচ বাস্তবতাটা ভিন্ন।

এমদাদুল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স-মাস্টার্স্ট শেষ করে ড্রাগ ওষুধ কোম্পানীতে চাকরী করছেন। অথচ তাকে দেখানো হয়েছে রাখিমালের ব্যবসা। শুধু এমদাদুলই নয় বেশির
ভাগ গ্রাহকের মূল পেশাই গোপন রেখে তিনি আবেদন ফরম পূরণ করেন।

পেশার তথ্য গোপন রাখার কারণে বালিয়াকান্দির মরাবিলা গ্রামের আব্দুল গফুর মোল্লার ছেলে মোঃ কামরুজ্জামান বাদশা মৃত্যু বরণ করার পরও তার পরিবার টাকা পাচ্ছে না।

কামরুজ্জামানের স্ত্রী রহিমা খাতুন জানান, তার স্বামী ২০১৬ সালে ১২ বছর মেয়াদী ১২ লক্ষ টাকার বীমা করেছিলেন। প্রথম কিস্তি দেওয়ার পর তার স্বামী ২০১৭ সালে মারা যান। কোম্পানীর নিয়ম অনুযায়ী এখন আমরা ১৬ লক্ষ টাকা পাবো।

কিন্তু বিভিন্ন আইনি জটিলতা দেখিয়ে এ পর্যন্ত আমাদের মাত্র ১ লক্ষ টাকা দিয়েছে। বাকী টাকা এখনো আমরা পাইনি। তাছাড়া অফিস আমাদের প্রথম কিস্তি বীমার প্রস্তাব পত্রটি এখনো দেয়নি।

রোববার (৬জানুয়ারি) সকালে অফিসে প্রস্তাবপত্রটি আনতে গেলে ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুর রহমান ফারুক আমাকে বলেন, এটা আমাদের কাছে নেই। এটা হেড অফিসে। এখন আমি মহাবিপদে পড়েছি। ছোট তিন ছেলেকে নিয়ে আমি মানবতার
জীবন-যাপন করছি। আমার ছোট ছেলের টাকার অভাবে এখন পর্যন্ত স্কুলে ভর্তি করাতে পারিনি।

এব্যাপারে ব্রাঞ্চ কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাহবুবুর রহমান ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, গ্রাহক যে পেশার কথা বলে আমরা সেটিই পূরণ করি। এখানে আমাদের করার কিছুই নেই। সব গ্রাহকই কি রাখিমালের ব্যবসা করে কিনা এমন প্রশ্ন করলে সে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

এব্যাপারে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর এমডি হেমায়েত উল্লাহকে বারবার ফোন ও ম্যাসেজ দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

/এসএস

Comments