স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ; আটক ৬

প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০১৮

ডেস্ক: সাভারের আশুলিয়ায় স্বামীকে বেঁধে রেখে তৈরি পোশাককর্মী স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সোমবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। —বিডি-প্রতিদিন

ধর্ষণের ঘটনায় সোমবার রাতেই আশুলিয়ার নরসিংহপুর সোনা মিয়া মার্কেট এলাকা থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- নরসিংহপুর এলাকার মো. জিন্নাহ’র ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২৩), একই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে আজাদ হোসেন (২৫), জলিল সরকারের ছেলে রানা সরকার (২৯), কোণাপাড়া এলাকার আব্দুল সোবহান শেখের ছেলে রবিউল শেখ (২১), একই এলাকার মো. রিয়াজুলের ছেলে রুবেল (২৩) ও ঘোষবাগ এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন (২৫)। তবে রজব নামে জড়িত একজন পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতে নরসিংহপুর সোনা মিয়া মার্কেট এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে গার্মেন্টকর্মী স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যান তার স্বামী। এসময় ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য তাহের মৃধার ম্যানেজার রজন, তার সঙ্গী রবিউলসহ সাত জন ওই দম্পতিকে আটক করে তারা স্বামী-স্ত্রী কি না জানতে চায়। তারা স্বামী-স্ত্রী বলে জানালেও ওই দম্পতিকে সোনা মিয়া মার্কেট এলাকার নাছিরের বাড়িতে পৃথক কক্ষে আটকে রাখা হয়। এসময় রাজনসহ তার সঙ্গীরা গভীর রাত পর্যন্ত গার্মেন্টকর্মী ওই নারীকে পৃথক কক্ষে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট মুঠোফোনে ওই দম্পতির মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দারি করে ধর্ষণকারীরা।

এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সোমবার রাত ১টার দিকে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করা হলে মুক্তিপণের টাকা প্রদানের শর্তে ফাঁদ পাতে পুলিশ। পরে গভীর রাতে সোনা মিয়া মার্কেট এলাকায় রবিউল ও রুবেল মুক্তিপণের টাকা নিতে আসলে তাদের হাতেনাতে আটক করে পুলিশ।

পরবর্তীতে আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোর রাতে সোনা মিয়া মার্কেট সংলগ্ন ইয়াপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তাহের মৃধার অফিস থেকে এ ঘটনায় জড়িত আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা ইউপি সদস্য তাহের মৃধার অনুসারী বলে জানিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা (নং-৫) দায়ের করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, ইউপি সদস্য তাহের মৃধা এলাকায় ধর্ষণ, চুরি, স্বেচ্ছাচারিতা, অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। তার রয়েছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন তাহের মৃধা।

তবে অভিযোগের সত্যতার ব্যাপারে ইউপি সদস্য তাহের মৃধা বলেন ভাই নিউজ কইরেন না বিষয়টি আমি দেখবো।

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দিপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একজন পোশাক শ্রমিক তার স্বামীর সাথে আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাচ্ছিলো। পথে আশুলিয়ার ইয়াপুর ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার তাহের মৃধার ম্যানেজার রাজনের নেতৃত্বে ৭ বখাটে তাদেরকে ধরে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা না দেয়ায় স্বামীকে একটি কক্ষে আটকে রেখে স্ত্রীকে অন্য কক্ষে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে বখাটেরা। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

/সিএইচ

Comments