উইন্ডিজকে হারিয়ে টাইগারদের দুর্দান্ত সিরিজ জয়

প্রকাশিত: ৭:১১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮

স্পোর্টস ডেস্ক: সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ৫০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৯৮ রান। ১৯৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৮.৩ ওভারে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। যার ফলে ২-১ ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নেয় টাইগাররা।

সিলেট স্টেডিয়ামে প্রথমবার ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নেমেই জয়ের ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে জিতে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানেডে ট্রফি নিজেদের করে নিল মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন ক্রিকেট দল।

শুরুটা দারুণ করেও প্রতিপক্ষকে ফের একবার নিজের উইকেট উপহার দিয়ে সাজঘরে ফিরলেন লিটন দাস। তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ৩৩ বলে ২৩ রান করে দলীয় ৪৫ রানের মাথায় কিমো পলের অফ স্টাম্পের বাইরের বল পুল করতে গিয়ে মিড অনে সহজ ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার।

এরপর তামিমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন সৌম্য সরকার। তামিম ইকবালের ক্যারিয়ারের ৪৪তম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরির তুলে নেন। ৬৪ বলে চার হাঁকিয়ে ৫০ পূর্ণ করেন এই বাংলাদেশি বাঁহাতি ওপেনার। তামিমের সঙ্গী সৌম্য সরকারও তার ওয়ানডের ৭ম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। ৬২ বলে এই হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি।

দলীয় ১৭৬ রানের মাথায় সৌম্য সরকারের বিদায়ে ভাঙ্গে ১৩১ রানের জুটি। ততক্ষনে বাংলাদেশের জয় বলা যায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। নিজের হাফসেঞ্চুরির পর যেন ঝড় তুলেছিলেন সৌম্য। সেঞ্চুরির সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত কিমো পলের ফুল লেংথ বল ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান সৌম্য। বিদায়ের আগে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ৮১ বলে ৮০ করে ফিরলেন সৌম্য। ৩৫.২ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ২ উইকেটে ১৭৬। এরপর ক্রিজে আসেন মুসফিকুর রহিম। তামিমকে সঙ্গে নিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তামিম ১০৪ বলে ৮১ রানে অপরাজিত থাকেন। আর মুশফিক ১৪ বলে ১৬ রান করেন।

এর আগে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করে সাকিব আল হাসানের বাহিনী। আগামী সোমবার সিলেটের এই ভেুন্যতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে।

শুক্রবারের এই জয়ের মধ্য দিয়ে এক বছরে সবচেয়ে বেশি (২০টি) ওয়ানডে জয়ের রেকর্ড গড়ল টাইগাররা। চলতি বছরে এনিয়ে ৪১টি ম্যাচ খেলে ২০টিতে জয় পায় বাংলাদেশ। এর আগে ২০০৬ সালে ৩৩ ম্যাচে ১৯টিতে জয় পেয়েছিল টাইগাররা।

ছবি: আইসিসি

প্রথমে ব্যাট করে শাই হোপের সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ১৯৮ রান সংগ্রহ করে উইন্ডিজ। টার্গেট তাড়া করতে নেমে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের জোড়া ফিফটিতে ৬৯ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ দল।

এর আগে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। মিরাজ, মাশরাফি ও সাকিবদের বোলিং দাপটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান করে। যদিও টানা দ্বিতীয় ম্যাচে অপরাজিত সেঞ্চুরি করে ক্যারিবীয়দের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নেন শাই হোপ। তিনি করেন অপরাজিত ১০৮ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন মেহেদি হাসান মিরাজ। চতুর্থ ওভারে তার ঘূর্ণিতে মিঠুনকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে মাঠ ছাড়া হন চন্দরপল হেমরাজ। এরপর ব্যক্তিগত ৬.৪ বলে বোল্ড করে ড্যারেন ব্রাভোকে ফেরান এই টাইগার স্পিনার। ২৬ বলে ১০ রান করে ফেরেন এই উইন্ডিজ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

এরপর দলীয় ২৩ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে মারলন স্যামুয়েলসকে সরাসরি বোল্ড করেন রুবেল হোসেনের বদলে এই ম্যাচে সুযোগ পাওয়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পরে শিমরন হেটমায়ারকে শূন্য রানে এলবির ফাঁদে ফেলে নিজের তৃতীয় উইকেট দখল করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। দলীয় ৯৯ রানে ক্যারিবীয় অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলকেও ফেরান মিরাজ।

১ রান করে মুশফিকের তালুবন্দি হন তিনি। এরপর রোস্টন চেজকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট শিকার করেন সাকিব আল হাসান। তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৮ রানে বাউন্ডারি লাইনে থাকা সৌম্য সরকারের ক্যাচে মাঠ ছাড়েন চেজ। পরে নতুন ব্যাটসম্যান ফ্যাবিয়েন অ্যালেনও সাকিবের শিকার পরিণত হন। মোহাম্মদ মিঠুন দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরান তাকে।

দলীয় ১৭১ রানে ক্যারিবীয় শিবিরে আঘাত হানেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যক্তিগত ১২ রানে কেমো পলকে বোল্ড করে বিদায় করেন তিনি। এরপর কেমার রোচকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন এই টাইগার তারকা। ৩ রানে এলবিডব্লিউ হন কেমার রোচ।

/সিএইচ

Comments