বরিশাল সিটিতে বড় দলগুলোকে চ্যালেঞ্জ ইসলামী আন্দোলনের

প্রকাশিত: ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ৪, ২০১৮

নির্বাচন ডেস্ক:বরিশাল নগরী-সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পূর্ব তীরে চরমোনাই দরবার শরিফ। চরমোনাইয়ের প্রয়াত পীর সৈয়দ ফজলুল করীম প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল অঞ্চলে সাংগঠনিকভাবে যথেষ্ট মজবুত।নগরীতে দলটির রয়েছে রিজার্ভ ভোট।

ইতিপূর্বে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)নির্বাচনে অংশ নেয়নি দলটি। এ কারণে ভোটের আগে চরমোনাই দরবার শরিফে গিয়ে পীর পরিবারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের মাধ্যমে তাদের রিজার্ভ ভোটের মুখাপেক্ষী হতেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীরা।

তবে আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠেয় বিসিসি নির্বাচনে প্রথমবারে মতো অংশ নিয়ে নিজ জেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এবার চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত চরমোনাই পীরের দল।

গত এক বছর ধরে ভেতরে ভেতরে বিসিসি নির্বাচনে অংশ নিতে সাংগঠনিক প্রস্তুতি চালাচ্ছে দলটি। মেয়র পদে প্রার্থী বাছাইয়ে গত বছর নভেম্বর মাসে সম্ভাব্য তিন প্রার্থীর একটি প্যানেল করেছিল মহানগর ইসলামী আন্দোলন।

তবে শেষ মুহূর্তে আরও শক্তিশালী প্রার্থী দিতে প্যানেলের বাইরে থেকে প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তবে নগরীতে ইসলামী আন্দোলনের রিজার্ভ ভোটের সংখ্যা নিয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলতে চায় না দলটি। সমর্থকদের ধারণা- প্রায় ২০ হাজার দলীয়কর্মী রয়েছেন, যারা বিসিসি নির্বাচনের ভোটার। এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম বলেন, ‘শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ইসলামী আন্দোলন বিসিসি নির্বাচনে অংশ নেবে না। এখানে জয়ী হওয়ার মতো আমাদের দলীয় ভোট ও সাংগঠনিক শক্তি আছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিসিসিতে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীই জয়ী হবে।’

মেয়র পদে তাদের প্রার্থী কে হচ্ছেন জানতে চাইলে নায়েবে আমির বলেন, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ঈদের আগেই দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণ করবেন। দল যেহেতু শক্তিশালী প্রার্থী দিতে চায়, তাই মহানগর শাখার প্রস্তাবিত তিনজনের বাইরে থেকেই প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পীর পরিবারের কোনো সদস্য প্রার্থী হবেন কি-না জানতে চাইলে মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘এ ধরনের সম্ভাবনা কম।’

ইসলামী আন্দোলনের মহানগর শাখার সেক্রেটারি মাওলানা জাকারিয়া হামিদী বলেন, মেয়র প্রার্থী করার জন্য গত নভেম্বরে বার্ষিক মাহফিলের আগে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সিনিয়র উপদেষ্টা অধ্যক্ষ এম সুলতান মাহমুদ, ইসলামী আইনজীবী আন্দোলনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট শেখ আবদুল্লাহ নাসের এবং ব্যবসায়ী আবদুল খালেকের নাম প্রস্তাব করা হয়। এর বাইরে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আশ্রাফ আলী আকনের নামও আলোচনায় রয়েছে।

মহানগর শাখা ৩০টি ওয়ার্ডের সবক’টিতে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী দেবে দলটি। ইতিমধ্যে ২০ ওয়ার্ডের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছে। কমপক্ষে ১০ ওয়ার্ডে তাদের কাউন্সিলর প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী মহানগর সেক্রেটারি জাকারিয়া হামিদী।

দেশের ধর্মভিত্তিক দলগুলোর মধ্যে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গত তিন বছর স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেশ ভালো করেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর ও সর্বশেষ খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তিতে দলটির অবস্থান ছিল তৃতীয়।

এ প্রসঙ্গে দলটির আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ওই সিটিগুলোতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের দল আরও বেশি ভোট পেত।

Comments