আসুন আমরা একটু সচেতন হই! নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৫:২১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৯, ২০১৯ আশরাফ আলম কাসেমী নদভী ইসলামের শুরু যুগে কাফের মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ইসলামের অবমাননাকর অনেক কবিতা রচনা করেছিলো। কিন্তু আজ তা বিদ্যমান নেই । এর একমাত্র কারণ ছিলো সাহাবায়ে কেরাম রা. সেগুলো থেকে দৃষ্টি এড়িয়ে চলতেন । সংরক্ষণ করার কোনো বস্তু ছিলো না বলে ইগ্নোর করে চলতেন। কেননা, সংরক্ষণ হয় ভালো কাজের মন্দের নয়। কিন্তু বর্তমানে কিছু অপায়া কর্তৃক ইসলাম, মুসলমান, কুরআন বা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানে অবমাননাকার কার্যকলাপ গুলো প্রচার-প্রসার করে আমরাই তা সংরক্ষণে আগ্রহী হয়ে উঠছি ! আমরাই অজান্তে সেই চক্রের প্রমোড করে যাচ্ছি! একবারও কী ভেবে দেখেছি এগুলো প্রচার করা (যদিও প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে হয়) আমাদের আদর্শের মাঝে আসে কিনা? এসব ক্ষেত্রে কেন আমরা সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হচ্ছি? নভোমন্ডল ভূমন্ডলে সবচেয়ে সম্মানিত ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি ছাড়া সম্ভাব্য পৃথিবীর বুকে দ্বিতীয় আর কোনো ব্যক্তি পাওয়া যাবে না যার বিরুদ্ধে এতো বেশী অবমাননার বই-পুস্তক ও ডকুমেন্টারি তৈরি হয়েছে যতোটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরুদ্ধে করা হয়েছে। তদ্রূপ কুরআন মাজিদ মানবজাতির জন্য চিরন্তন আদর্শ ও সকল কিছুর সমাধানের একমাত্র মুক্তির মূলমন্ত্র। এর চেয়ে বিশুদ্ধ, গ্রহণযোগ্য, অধিক পঠিত, সম্মানিত ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পৃথিবীর বুকে দ্বিতীয়টি নেই। কিন্তু এই কুরআন মাজিদ এর বিরুদ্ধে এতো বেশী বই-পুস্তক ও ডকুমেন্টারি রচিত হয়েছে। যা পৃথিবীর বুকে অন্য কোনো গ্রন্থের বিরুদ্ধে রচিত হয়নি । কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সত্তা ও কুরআনের সম্মানে বিন্দু আঁচ আসেনি কখনো। বরং বিরুদ্ধাচরণ গুলো ইসলামের পক্ষে দাওয়াতের কাজে দিয়েছে। ইসলামের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। এই ধারা নতুন নয়, বরং সর্বযুগে সর্বকালে ইসলাম আবির্ভাব থেকে নিয়ে আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সর্বকালেই মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং আদর্শ সেটিই ছিলো যে আদর্শ সাহাবায়ে কেরাম দেখিয়ে গিয়েছিলেন। কোনোক্রমেই তাঁরা এগুলোর প্রচার প্রসার করেননি। বরং দৃষ্টি এড়িয়ে চলেছেন। তবে কোনো কোনো সময় প্রয়োজন অনুসারে প্রতিবাদ ও সমুচিত জবাবও দিয়েছেন। বর্তমানে সেই আদর্শ অনুসরণ করে চলাই হবে আমাদের একমাত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় হলো, বিভিন্ন সময়ে কিছু অপায়া কর্তৃক অবমাননাকর কোনো কিছু এলেই প্রদিবাদের নামে আমরা তার প্রচার প্রচারণায় লেগে যাই । প্রকৃত পক্ষে নিজেদের অজান্তে এর দ্বারা তাদেরকেই প্রমোড করে চলছি। এবং এমন অযাচিত বস্তু গুলোর সংরক্ষণ করছি যা কখনোই আমাদের দায়িত্বের মধ্যে ছিলো না। আর না কোনো কালে তা আমাদের আদর্শে ছিলো। প্রতিবাদ অবশ্যই করতে হবে। সমুচিত জবাব অবশ্যই দিতে হবে । এটি আমাদের ঈমানী চেতনার পরিচায়ক । তাই বলে কী সেগুলোর প্রচার-প্রসারের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ করতে হবে? এমন নীতির কোনো বৈধতা নেই । তাই সকলের কাছে আবেদন থাকবে, আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। কোনো কোনো সময় ইসলাম, মুসলমান, কুরআন, হাদিস, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবমাননাকর এক দুটি অডিও ভিডিও বা লিখিত পোস্ট আসে । অজনাবশত আমরা অনেকই এগুলোর প্রচার করে থাকি । আবার অন্যকে শেয়ার করতেও বলে থাকি । যা মোটেও উচিত নয় । এর বিপরীতে এসব অডিও, ভিডিও বা পোস্টে দৃষ্টি পড়ার সাথে সাথেই ইগ্নোর করে চলা । যাদের থেকে এমন অবমাননাকর পোস্ট আসে তাদেরকে পোস্ট না করার কথা বলা। সচেতনতা তৈরি করা। বুঝানোর পরও বিরত না থাকলে এমন মানুষদের কে নিজেদের আইডি থেকে দূরে রাখা । এতেই কল্যাণ নিহিত আছে। সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে লেখাটি অপরের কাছে পৌঁছাতে পারি। অথবা লেখাটিতে দেওয়া মূল ম্যাসেজটি যে কোনো মাধ্যমেই হোক অন্যকে বুঝাতে পারি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। সঠিক বিষয়টি অনুধাবন করার সুযোগ দিন। সম্প্রতি এক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক কুরআনের অবমাননাকর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে । এর প্রেক্ষিতে আজকের এই লেখাটির জন্ম। আমরা এটি প্রচার করা থেকে যেন বিরত থাকি । যারা পোস্ট করে প্রচার করেছি তাঁরা যেন ডিলেট করে দেই। লেখক: আলেম ও লেখক, শিক্ষার্থী দারুল উলুম নদওয়াতুল উলামা, ভারত। Comments SHARES মুক্তমত বিষয়: