রোহিঙ্গাদের ভাষানচরে স্থানান্তর: জাতিসংঘ প্রতিনিধির উদ্বেগ প্রকাশ

প্রকাশিত: ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০১৯

একুশে ডেস্ক: মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাষানচরে স্থানান্তরের যে পরিকল্পনা বাংলাদেশ সরকার নিয়েছে সে ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইয়াংহি লি।

তিনি বলেছেন, জনমানবহীন ওই দ্বীপে রোহিঙ্গাদের বসবাস করতে দেয়া উচিত হবে না।

বাংলাদেশ সরকার আগামী মাসে ২৩ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাষানচরে স্থানান্তর করা হবে বলে ঘোষণা করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইয়াংহি লি বলেছেন, জনমানবহীন দ্বীপটিতে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর করা হলে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

ওদিকে মিয়ানমারে এখনো রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নিপীড়ন চলছে বলেও জানান জাতিসংঘের এই বিশেষ প্রতিনিধি।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ব্যাপক হারে গণহত্যা চালানোর দায়ে তিনি মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বা আইসিসি’তে মামলা করার জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।

একইসঙ্গে আইসিসি’কে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন ইয়াংহি লি।

বর্তমানে কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় নতুন-পুরাতন মিলিয়ে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। বন জঙ্গল উজাড় করে পাহাড় কেটে গড়ে উঠেছে মিয়ানমারের নাগরিক এসব রোহিঙ্গার বসতি।

কিন্তু আর্থসামাজিক পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে ধস নামার আশংকায় রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে বাংলাদেশ সরকার।

এরই অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ বাসস্থান হিসেবে নোয়াখালীর চারটি চরের সমন্বয়ে ভাষাণচর নামে একটি এলাকাকে বাছাই করা হয়েছে।

তবে সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১৩ সালের দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ এবং নোয়াখালীর মধ্যবর্তী স্থানে গড়ে ওঠা এ চরে মানব বসতি গড়ে তুলতে আরো কয়েক বছর লাগবে। চরটির মোট আয়তন প্রায় ১৫ হাজার একর হলেও জোয়ারের সময় এর ৩ থেকে ৪ হাজার একর জায়গা সাগরের পানিতে ডুবে যায়।

এছাড়া পূর্ণিমা এবং আমবস্যার জোয়ারের সময় তা ভয়াবহ রূপ নেয়। সেইসঙ্গে চরের মাটি বর্তমানে পরিপক্ক না হওয়ায় সেখানে মানব বসতি স্থাপন ঝুঁকিপূর্ণ।

এই অবস্থায় রোহিঙ্গাদের ভাষাণচরে স্থানান্তরের আগে সেখানকার মাটির যাবতীয় পরীক্ষা করা দরকার বলে মনে করছেন এসব বিশেষজ্ঞ। সূত্র: পার্সটুডে।

এফএফ

Comments