ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’

‘ফণী’: ওড়িশায় মারা গেছে ৩ জন; কলকাতায় বন্ধ বিমান ও ট্রেন চলাচল

প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০১৯
পুরীতে ঝড়ের তাণ্ডব। ছবি: এপি

ডেস্ক: প্রচণ্ড হাওয়া, সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। একটার পর একটা গাছ উপড়ে পড়ে যাচ্ছে। উড়ে যাচ্ছে ঘরের চাল। ফণীর তাণ্ডবে রীতিমতো লন্ডভন্ড ওড়িশা। এতে মারা গেছে অন্তত দুইজন।

দুই জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ওড়িশা রাজ্যের বিশেষ ত্রাণ কমিশনার বিষ্ণুপদ শেঠি জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণী চলাকালে এক বয়স্ক ব্যক্তি একটি আশ্রয়শিবিরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আরেক ব্যক্তি সতর্কতা উপেক্ষা করে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে বাইরে যান। তাঁর ওপর গাছ পড়লে তিনি নিহত হন।

তবে বার্তা সংস্থা পিটিআই আরো একজনের মৃত্যুর খবর দিয়ে জানায়, অপর একজন উড়ে যাওয়া শক্ত কোনো কিছুর আঘাতে নিহত হন।

শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ ওড়িশার পুরীতে আছড়ে পড়ে ফণী। আছড়ে পড়ার সময় তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। তার পর থেকেই ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলে তাণ্ডব দেখাতে শুরু করেছে ফণী।

পুরী, কটক, ভুবনেশ্বর, বালাসোর, চাঁদিপুর, গোপালপুরের মতো এলাকাগুলোতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আবহবিদেরা। ইতিমধ্যে দু’জনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছে। এই এলাকাগুলো সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট জনশূন্য।

• ঝড়ের দাপটে বহু গাছ উপড়ে গিয়েছে ওড়িশায়। বিদ্যৎহীন ওড়িশার বিভিন্ন অঞ্চল। লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে উপকূলবর্তী বহু গ্রাম। জল জমে গিয়েছে, ভেঙে গিয়েছে বহু ঘর।

• পুরীর সাক্ষীগোপালে গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ার।

• পশ্চিমবঙ্গের জারি হয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা।

• পুরীর জগন্নাথ মন্দির সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎহীন ওড়িশার পুরী, গোপালপুর-সব বিভিন্ন এলাকা।

• ফণীর গতিপথে ওড়িশার ১০ হাজার গ্রাম এবং ৫২টা শহর পড়বে।।

• ফণীর যাত্রাপথ থেকে ১১ লক্ষ মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে ওড়িশা সরকার।

• পুরীতে ফণী আছড়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, মন্দারমণি-সহ উপকূলবর্তী অঞ্চলে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়েছে তুমুল ঝড়বৃষ্টি। শঙ্করপুরে ভেঙে পড়ল হাইটেনশন বিদ্যুতের খুঁটি। ঘটনাস্থলে স্থানীয় বিধায়ক।

•  কলকাতা বিমানবন্দর আজ বিকেল ৩টে থেকে কাল সকাল ৮টা পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ থাকছে। এর আগে বলা হয়েছিল আজ রাত সাড়ে ৯টা থেকে আগামী কাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ভুবনেশ্বরেও বন্ধ বিমান পরিষেবা।

• সকাল সাড়ে ১০টা। কলকাতা, মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি

• বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ৪ হাজার ৮৫২ সাইক্লোন এবং বন্যা আশ্রয় গড়ে তোলা হয়েছে। আপাতত, ওই ১১ লক্ষ মানুষের ঠাঁই এই আশ্রয়গুলোই।

• কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব কন্ট্রোল রুম খুলেছেন। ফণী নিয়ে খবরাখবর বা যে কোনও সাহায্যের জন্য হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩৮-এ ফোন করতে পারেন।

• শনিবার পর্যন্ত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে মোট ১৪৭টি ট্রেন।

• ৩৪টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল, ত্রাণ সামগ্রী-সহ চারটি উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিশাখাপত্তনম এবং চেন্নাইয়ে। বিশাখাপত্তনম, চেন্নাই, পারাদ্বীপ, গোপালপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া, ফ্রেজারগঞ্জ এবং কলকাতায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল মোতায়েন থাকছে।

•  জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার-এর হিসেব অনুযায়ী গত ২০ বছরে এই অঞ্চলের সব চেয়ে ভয়ঙ্কর সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হয়েছে ফণী। এর আগে ১৯৯৯-এ এই মাত্রায় পৌঁছনো সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন, ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বিপুল।

• দিঘা থেকে পর্যটকদের ফেরাতে এসবিএসটিসি অতিরিক্ত ৫০টি বাসের ব্যবস্থা করেছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

/আরএ

Comments