ক্রাইস্টার্চের সেই মসজিদের খুৎবায় ইমামের হৃদয় কাঁপানো বক্তব্য নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৫:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০১৯ ডেস্ক: নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল-নূর মসজিদে হামলার এক সপ্তাহ পর আজ জুমার আজান সরাসরি সম্প্রচার করেছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দেশটিজুড়ে আজ দুই মিনিটের নীরবতাও পালন করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। হামলার স্থান আল-নূর মসজিদে শোক প্রকাশে আজ হাজারো মানুষ সমবেত হন। এতে যোগ দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নও। এর আগে নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টেও দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুসলামনদের শ্রদ্ধা জানিয়ে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু করেন। নিজের বক্তব্য শুরু করেন সালাম দিয়ে। আজ শুক্রবারে তিনি সালাম দিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। এসময় বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা. এর হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজের বক্তব্য প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘নবী মুহাম্মদ সা. বলেছেন, পারস্পরিক ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির ক্ষেত্রে বিশ্বাসীরা (মুমিন) সবাই যেন একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে পুরো শরীরই যন্ত্রণায় ব্যথায় কাতর হয়ে পড়ে’। নিউজিল্যান্ডবাসীও আপনাদের মতোই শোকাহত। জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, নিউজিল্যান্ডবাসী আপনাদের মতোই শোকাহত। এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর মসজিদের ইমাম জুমার খুতবা প্রদান করেন। খুতবায় মসজিদটির ইমাম জামাল ফাওদা মর্মস্পর্শী ব্ক্তব্য দেন। তার সেই বক্ত্যে সংক্ষিপ্তাকারে তুলে ধরা হলো:- গত শুক্রবার আমি এ মসজিদটিতে দাঁড়িয়েছিলাম। তখন এক সন্ত্রাসীর চোখেমুখে ঘৃণা ও ক্ষোভ দেখেছি। এতে অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪২ জন। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ে কষ্ট পেয়েছেন। আজ একই স্থানে দাঁড়িয়ে যখন চারপাশে তাকিয়েছি, তখন নিউজিল্যান্ড ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের চোখে ভালোবাসা ও সহানুভূতি দেখতে পেয়েছি। এতে আরও লাখ লাখ মানুষের হৃদয় ভরে গেছে, যারা আমাদের সঙ্গে এখানে শারীরিকভাবে নেই, কিন্তু আত্মীকভাবে আছেন। সন্ত্রাসী আমাদের দেশকে শয়তানি মতাদর্শ দিয়ে ছিন্নভিন্ন করতে চেয়েছে, যা বিশ্ববাসীকে হতাশ করে দিয়েছে। কিন্তু এসব কিছু সত্ত্বেও আমরা দেখিয়ে দিয়েছি যে, নিউজিল্যান্ড হচ্ছে একেবারে অবিচ্ছেদ্য। বিশ্ব ভালোবাসা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই নিউজিল্যান্ড। আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কিন্তু আমরা ভেঙে পড়িনি। আমরা বেঁচে আছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, কাউকে আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেব না। শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদের শয়তানি মতাদর্শ এই প্রথম আমাদের আঘাত হানেনি। কিন্তু এটি আমাদের কঠিন আঘাত দিয়েছে। এতগুলো লোককে হত্যা সাধারণ কিছু নয়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের সংহতি অসাধারণ। হতাহতদের পরিবারগুলোকে আপনাদের ভালোবাসা, তাদের মৃত্যুকে বিফলে যেতে দেয়নি। তাদের রক্ত আশার বীজে পানি ঢেলে দিয়েছে। তাদের মাধ্যমে বিশ্ববাসী ইসলামের সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছেন। দেখতে পেয়েছেন আমাদের ঐক্যের সৌন্দর্যও। /আরএ Comments SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: