উড়িষ্যা ছাড়িয়ে এখন পশ্চিমবঙ্গের দিকে ‘ফণী’

প্রকাশিত: ১২:৪২ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০১৯

ডেস্ক: প্রলঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ভারতের উড়িষ্যায় আঘাত হানার পর ধেয়ে আসছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দিকে। আজ দুপুরের মধ্যেই এটি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আঘাত হানবে। এমনটিই আশঙ্কা করছে ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর।

শুক্রবার সকালে কলকাতার আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ফনি দুপুরের দিকে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। পরে সেটি বাংলাদেশ যাবে। উড়িষ্যায় তেমন ক্ষতি না হলেও পশ্চিমবঙ্গে ‘ফণী’ তাণ্ডব চালাতে পারে বলে আশঙ্কা এ কর্মকর্তার।

 ‘ফণী’ মোকাবেলায় পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে সব ধরনের উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গে সমুদ্র উপকূলবর্তী আট জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে স্কুল ও কলেজ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীর সাত যুদ্ধজাহাজ ও সাতটি হেলিকপ্টার। ত্রাণসামগ্রীসহ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূলবর্তী দীঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, বকখালী, শঙ্করপুর, হলদিয়া সমুদ্রবন্দরে লাল সংকেত দিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে পর্যটকদের।

পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রবন্দর হলদিয়া ও কলকাতা বন্দরের জাহাজগুলোকে নিরাপদ এলাকায় অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রোববার ভারত ও বাংলাদেশ ফনিমুক্ত হবে জানিয়ে সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি কাল শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের দিকে চলে যাবে। রোববার ‘ফণী’ নিস্তেজ হয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ ঝড়মুক্ত হবে।

পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী উড়িষ্যায় ফনি আঘাত হেনেছে শুক্রবার সকাল ৯টায়। ঘণ্টায় ১৮০-২০০ কিলোমিটার গতিবেগে এটি হানে। উড়িষ্যায় পার্শ্ববর্তী দীঘায় গতকাল রাত থেকে শুরু হয়েছে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি।

এদিকে ‘ফণী’ নিস্তেজ হয়ে আজ রাতে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। শুক্রবার সকালে ঢাকায়ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

ঢাকার আশপাশের জেলায়ও শুক্রবার বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। দিনভর থেমে থেমে এই বৃষ্টি থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

/আরএ

Comments