ফিলিস্তিন : ২৪ ঘন্টায় এরদোগানের ৪ স্ট্যাটাস, ইসরায়েলকে তুলোধুনা নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১২:৫৪ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২৩ ফিলিস্তিনে হামাস ও ইসরায়েল সংঘাতে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আবেগঘন বক্তব্য ও ইসরায়েলের কঠোর নিন্দা করেছেন তুর্কিয়ে প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা ও বিশ্বের প্রভাবশালী নেতাদের সমালোচনাও করেছেন তিনি। এছাড়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার কথাও উল্লেখ্য করেছেন এরদোগান। বুধবার (১১ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আলাদা আলাদা সময়ে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন স্টাটাস আপডেট করেন এরদোগান। ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এরদোগান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের কোনো প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেনি, জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংগঠন ফিলিস্তিনিদের একা ছেড়ে ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও আইন রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এরদোগান বলেন, মানবিক সহায়তা হ্রাসের ফলে ফিলিস্তিনি মানুষদের শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে সামন্তবাদী সিদ্ধান্ত থেকে সকলের (ইসরাইল ও মিত্রদের) বিরত থাকা উচিত। অন্ধভাবে একপক্ষীয় সমর্থন দিলে বর্তমান সংকট আরো গভীর হবে বলেও সতর্ক করেন তুর্কিয়ে প্রেসিডেন্ট। মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা, ইউরোপ ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের প্রভাবশালী নেতাদের প্রতি নীরবতা ভেঙে ন্যায়নিষ্ঠ, ন্যায্য এবং মানবিক মনোভাব গ্রহণ করার আহ্বান জানান এরদোগান। বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব বক্তব্য তুলে ধরেন এরদোগান। বুধবার বিকেলে ২৬ তম বার্ষিক ভোক্তা পুরষ্কার অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন এরদোগান এর আগে দুপুর ২টায় ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করে বেনিয়ামিন সরকারকে তুলোধুনা করেন এরদোগান। তিনি লিখেন, মানুষকে তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে বাধা দেওয়া এবং বেসামরিক লোকজনের বাসস্থানে বোমা হামলা করা—সংক্ষেপে বলতে হলে সব ধরনের লজ্জাজনক পদ্ধতি ব্যবহার করে সংঘাত পরিচালনা করা—কোনো যুদ্ধ হতে পারে না। গাজায় নেতানিয়াহু সরকারের পানি, খাদ্য, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ এবং ইসরায়েলি বিমান হামলায় একের পর এক ঘরবাড়ি ধ্বংসের ঘটনাকে তিনি ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধেরও একটা নীতি নৈতিকতা আছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ইসরায়েল সংঘর্ষে সেটাও লঙ্ঘন করছে গুরুতরভাবে। গাজায় ইসরায়েলের এমন বর্বর আক্রমণের বিষয়ে বিশ্ববাসীকে চোখ বন্ধ করে না রাখার আহ্বানও জানান এরদোগান। এরদোগান বলেন, ইসরায়েল ভূখণ্ডে বেসামরিক হত্যায় আমরা উন্মুক্তভাবে বিরোধিতা করি। একইভাবে, গাজায় নিরপরাধদের হত্যা কোনো বৈষম্য ছাড়া ক্রমাগত বোমা হামলার শিকার হওয়া আমরা কখনই মেনে নেব না। এরদোগান লিখেন, শহরের পানি,বিদ্যুৎ, প্রবেশ ও বাহির বন্ধ করে তার অবকাঠামো ধ্বংস করে… মসজিদ থেকে চার্চ পর্যন্ত সকল পূজাস্থান ও স্কুল ধুয়ে যাচ্ছে। মানুষকে তাদের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদা পূরণ হতে বাধা দিয়ে… যে ভবনগুলোতে বেসামরিক লোকজন বসবাস করতেন সেখানে বোমা হামলা করে, বিমান হামলা করে মানুষ হত্যা করা, সীমান্তের গেটে যা ছিল একমাত্র পথ… ‘ভেলহাস’ সেটি বন্ধ করে দেওয়া, এরকম কোনো লজ্জাজনক উপায়ে সংঘটিত একটি যুদ্ধ শুধু যুদ্ধ নয় বরং একটি গণহত্যা। গাজার প্রতি এমন বৈষম্যমূলক নীতি ইসরায়েলকে বিশ্বব্যাপী আবাঞ্চিত হওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও হুশিয়ারি উল্লেখ করেন এরদোগান। এর আগে দুপুর ১টায় নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন এরদোগান। ভিডিওতে দেখা যায় তিনি ১৯৬৭ সাল থেকে বর্তমান সময়ের ফিলিস্তিন মানচিত্র তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছিন। এসময় তিনির বলেন, এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা শুধুমাত্র একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই আসতে পারে যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম। যার বৈধতা জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে, ১৯৬৭ সালের সীমান্ত এবং ভৌগলিক অখণ্ডতার উপর ভিত্তি করে। এর বাইরে ভিন্ন কোনো পথ খোঁজা মানে শুধু আরো ধ্বংস, আরো কান্না এবং আরো প্রাণহানি। এরদোগান বলেন, ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তাকে আমরা সম্মান করি, কিন্তু তাই বলে পবিত্র মসজিদুল আকসা, হারাম আল শরীফ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। এ সময় তিনি নিজের দেশ, অঞ্চল ও বিশ্বকে অনন্ত শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনাও করেন। এর আগে বুধবার মধ্যরাতে (১২.৩০মিনিট) লিখেন, গাজায় পানি সরবরাহ করা হয় না। বিদ্যুৎ চালু করা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলো কেমন আছে, চলছে তা আমরা জানি না। দুর্ভাগ্যবশত প্রার্থনার স্থান, হাসপাতাল, স্কুল সব জায়গায় নির্মমভাবে গুলি করা হচ্ছে; যখন এটি করা হচ্ছে তখন বিশ্ব নীরব। কেউ একটা কথা বলছে না । মানবাধিকার কোথায়? Comments SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: Recep Tayyip Erdoğanএক দিনে ৪ প্রতিক্রিয়াএক দিনে ফিলিস্তিনের পক্ষে ফেসবুকে এরদোগানের ৪ স্টাটাসএরদোগানফিলিস্তিনের পক্ষে এরদোগানের কঠোর অবস্থান