কাশ্মীরে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি : ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ৩:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০১৯

নিউজ ডেস্ক চলমান কাশ্মীর সঙ্কট নিরসনে ফের মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মার্কিন গণমাধ্যম ‘এনবিসি নিউজ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের এমন অভিপ্রায়ের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

বিশ্লেষকদের মতে, এর প্রায় মাস খানেক আগে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে বসিয়ে একই ইস্যুতে সংশ্লিষ্টদের মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। যদিও তখন ট্রাম্পের সেই প্রস্তাব নিয়ে ভারতে ব্যাপক নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।

এর আগে গত ৫ আগস্ট (সোমবার) ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।

এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন; আর ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে।

এসবের প্রেক্ষিতে বর্তমানে কার্যত এক অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভূস্বর্গ খ্যাত এই কাশ্মীর। যে কারণে টেলিফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সামগ্রিক পরিস্থিতি অবহিত করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পরে যদিও ভারতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একই ইস্যুতে ট্রাম্পকে ফোন করে পাক প্রশাসনের বিরুদ্ধে নালিশ জানান।

পরবর্তীতে দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই ফোনালাপ শেষে গত সোমবার (১৯ আগস্ট) এক টুইট বার্তায় তিনি কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘একটি কঠিন পরিস্থিতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। যদিও পরদিন মঙ্গলবার গণমাধ্যম ‘এনবিসি নিউজে’র সঙ্গে আলাপকালে দীর্ঘদিন যাবত অঞ্চলটির বিদ্যমান সঙ্কটময় অবস্থাকে ‘উত্তেজনাপূর্ণ ও বিস্ফোরক’ পরিস্থিতি হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘কাশ্মীর ভীষণ জটিল একটি অঞ্চল। তবে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত করার প্রচেষ্টায় যুক্ত হতে পেতে আমি খুশি এবং এ ইস্যুতে আমরা সাহায্য করতে আগ্রহী।’

এতদিন পরও পাক-ভারত মধ্যকার কোনো ভালো সম্পর্ক তৈরি না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এসবের জন্য একমাত্র দায়ী হচ্ছে ধর্ম। কাশ্মীর ইস্যুটি অনেক জটিল। সেখানে কিছু সংখ্যক হিন্দুও আছে এবং উল্লেখযোগ্য মুসলিমও রয়েছে। তবে আমি কখনই এটা বলতে পারি না যে, তারা সবাই এক সঙ্গে ভালো রয়েছেন।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘মধ্যস্থতা করতে আমার যতটুকু সম্ভব তাই করব। আপনারা দুটি দেশ, দীর্ঘ সময় যাবত এক সঙ্গে এবং ঘনিষ্ঠভাবে থাকতে পারছেন না, এটা খুবই বিস্ফোরক পরিস্থিতি ও দুঃখজনক।’

ফ্রান্সে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ‘জি সেভেন’ সম্মেলনেও কাশ্মীরের ইস্যুটি তোলা হবে জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘সেখানে আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এ বিষয়ে ভালোভাবে কথা বলতে চাই। পরে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সমাধানের পথ খোঁজা যাবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষায়, ‘আমরা মনে করি, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিয়ে সর্বোত্তম সাহায্য করে যাচ্ছে। যেমনটা আপনারা জানেন, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিনের অনেকগুলো অমীমাংসিত সমস্যা রয়েছে। মধ্যস্থতা কার্যক্রমের মাধ্যমে আমি সেগুলোর যতটা পারি সমাধান করব।’

Comments