চীনে ১৩ হাজার মুসলিম গ্রেফতার, উইঘুর যেন বিশাল এক বন্দি শিবির

প্রকাশিত: ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০১৯

একুশ ডেস্ক: চীন ২০১৪ সালে দেশটির জিনজিয়াং প্রদেশের প্রায় ১৩ হাজার উইঘুর মুসলিমকে আটকে রাখার কথা স্বীকার করেছে। এর আগে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির জাতিগত বৈষম্য বিষয়ক সংস্থা জানায়, চীনে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে আটকে রাখা হয়েছে। উইঘুর প্রদেশকে কার্যত ‘বিশাল একটি বন্দিশিবিরে’ পরিণত করা হয়েছে।

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে এ বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিলো বেইজিং। সোমবার চীন সরকারের এক শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে জিনজিয়াংয়ে প্রায় ১৩ হাজার ‘সন্ত্রাসী’কে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর আল-জাজিরা।

মূলত জিনজিয়াং (শিনহিয়াং) প্রদেশের অন্তর্ভূক্ত উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্য থেকেই এসব ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানায় চীন সরকার।

চীনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে পাশ্চাত্য ও মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশ। যদিও চীন বলছে সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য এসব কারাগার ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ হিসেবে পরিচালিত হয়ে থাকে।

শ্বেতপত্রে চীনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, ২০১৪ সাল থেকে জিনজিয়াংয়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে ১ হাজার ৫৮৮টি অভিযান চালিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ১২ হাজার ৯৯৫ জনকে। তাছাড়া জব্দ করা হয়েছে ২ হাজার ৫২টি বিস্ফোরক দ্রব্য।

৪ হাজার ৮৫৮টি নিষিদ্ধ ধর্মীয় কার্যকলাপের জন্য ৩০ হাজার ৬৪৫ জনকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ২২৯টি নিষিদ্ধ ধর্মীয় বস্তু জব্দ করেছে।

শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, শুধু অল্প সংখ্যক সংখ্যক মানুষ কঠোর শাস্তি ভোগ করে যারা কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য বা যারা চরমপন্থী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।

শ্বেতপত্রে আরও বলা হয়, ‘২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে জিনজিয়াংয়ে তারা কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে।

পূর্ব তুর্কিস্তানের যোদ্ধারা জিনজিয়াং এলাকায় তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। তারা জিহাদের মাধ্যমে শহীদ হওয়া ও জান্নাতেযাওয়ার নামে এই চিন্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।’

এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসলামের নামে যে ধর্মীয় সহিংসতা ঘটানো হয় প্রকৃতপক্ষে তা ইসলাম নয়।’

শ্বেতপত্রে বলা হয়, জিনজিয়াং চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। উইঘুর নৃ-গোষ্ঠী দীর্ঘ অভিভাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে এসেছে এবং বসবাস করে আসছে। তারা তুর্কি বংশধর না।

উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে তর্কি সংস্কৃতির গভীর সম্পর্ক আছে। উইঘুররাও তুর্কি ভাষায় কথা বলে। তাই তুরস্ক জিনজিয়াং এর পরিস্থিতি নিয়ে সবসময় উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে।

তবে চীন সবসময়ই তুরস্কের এই ধরনের তৎপরতাকে অন্য অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।

এফএফ

Comments