ভারতে ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় হাফেজে কুরআনের উপর নৃশংস হামলা নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১০:৪৮ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০১৯ ডেস্ক: ভারতের কলকাতায় এবার ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় একজন হাফেজে কুরআনের উপর হামলা করেছে এক দল কট্টর হিন্দু। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লির একটি পার্কে ‘হিন্দু সংহতি’ নামের একটি সংগঠন অনুষ্ঠান করছিলো। ওই দিনই দিনে হায়াতপুর মাদরাসার ছুটি হয়েছিলো। ছুটি কাটাতে পাশের রাস্তা দিয়ে শাহরুখ নামের এক হাফেজে কুরআন তার বাড়ী ফিরছিলো। রাস্তায় কয়েকজন হিন্দ শাহরুখের দাঁড়ি দেখে তাকে দাঁড় করিয়ে নাম জিজ্ঞেস করে। সে তার নাম শারুখ বললে তার সঙ্গে তারা অযথা ঝগড়া শুরু করে। ঝগড়ার এক পর্যায় তাকে বেদড়ক মারপিট করে তারা। অন্যান্য মুসলমানরা ফিরাতে গেলে তাদেরও হুমকি ধমকি দিলে তারা হতাশ দাঁড়িয়ে থাকে। শারুখ বলেন, তারা প্রথমে আমার পিঠে আঘাত হানে। এরপর মুখে ঘুষি মারে। আমার চোখ এখনও রক্তাক্ত হয়ে আছে। আমার বাম চোখ এখনও বন্ধ, আল্লাহ ভাল জানেন, সম্ভবত আমি আমার বাম চোখ দিয়ে আর দেখতে পাবো না। এদিকে আরেক মুসলিম যুবককে মোটরবাইক চোর সন্দেহে গত ১৮ জুন প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটায় সরাইকেলা-খরসোঁয়া জেলার ধক্তিদি গ্রামের কিছু মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেটাতে পেটাতে যুবককে তার নাম জিজ্ঞেস করে কয়েক জন। তিনি বলেন, সোনু। পুরো নাম বলতে বলা হয়। তবরেজ আনসারি। শোনা মাত্রই মারের মাত্রা বাড়ে। সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার নির্দেশ। জানা যায়, মার্কিন সরকারের রিপোর্ট খারিজ করে নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছে, ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত! ঠিক এমন মুহূর্তেই ভারতে চলছে মুসলিম নির্যাতন। ইন্টারনেটে ছড়ানো বহু ভিডিয়োর একটিতে দেখা যাচ্ছে, তবরেজকে পেটাতে পেটাতে লাঠিই ভেঙে যাচ্ছে এক জনের। বুকফাটা আর্তনাদ করছেন তবরেজ। অনেক পরে পুলিশ এসে তবরেজকে উদ্ধার করে চুরির দায়ে কোর্টে তোলে। কোর্ট পাঠায় জেল হেফাজতে। গত কাল অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তবরেজকে। সেখানে তিনি মারা যান। সমাজকর্মীদের যদিও অভিযোগ, হাজতে মৃত্যুর পরেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। তবরেজের পরিবার জানিয়েছে, পুণেতে ঝালাই মিস্ত্রির কাজ করতেন ২৪ বছরের ওই যুবক। বাড়ি এসেছিলেন ইদ উপলক্ষে। ১৮ তারিখে আরও দু’জনের সঙ্গে জামশেদপুর যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন তিনি। ভিডিয়োয় শোনা গিয়েছে, তবরেজ বলছেন, ওই দু’জন তাঁকে একটি মোটরবাইকের সামনে অপেক্ষা করতে বলে গিয়েছিল। পরে দু’জনই পালায়। ভিডিয়োগুলির ভিত্তিতে পাপ্পু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এফআইআরে। পাপ্পুর সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের যোগ মেলেনি বলে পুলিশ দাবি করলেও কেউ কেউ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৬ থেকে এ নিয়ে ১৩ জনকে পিটিয়ে মারা হল ঝাড়খণ্ডে। এর প্রায় প্রত্যেকটি ঘটনাতেই আঙুল উঠেছে হিন্দুত্ববাদী বা গোরক্ষকদের দিকে। এমএম/ Comments SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: