সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন ও নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠনের দাবি চরমোনাই পীরের

প্রকাশিত: ৯:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০১৮

শাহনূর শাহীন: জাতীয় নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন কমিশন পূনর্গঠন করে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলনের আমীর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ইসলামী আন্দোলনের জাতীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি  এ দাবি জানান।

দূর্নীতি, দুঃশাসন প্রতিরোধে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত মহাসমাবেশে চরমোনাই পীর বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধিনে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না।

সিইসি নুরুল হুদা সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই কমিশন পূণর্গঠন করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে। এবং তফসিল ঘোষণার পর সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন ও নির্বাচনের সময় সশস্ত্রবাহিনীর হাতে বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে।

নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে দূর্নীবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করারও দাবি জানান তিনি। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলেরও দাবি জানান চরমোনাই পীর।

দুুপুর ২টা থেকে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই সামাবেশস্থলে লোকজন জড়ো হতে থাকে।  জানা যায়, গতকাল রাত থেকেই সারাদেশের নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসতে থাকে।

সমাবেশ শুরু হওয়ার পর সমাবেশের মুল ভেন্যু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়িয়ে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন থেকে শুরু করে মৎস ভবন, সুপ্রিমকোর্ট, জাতীয় ঈদগাহ হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত সমাবেশের বিস্তৃতি ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সামাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন , কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, শেখ ফজলে বারী মাসউদ, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল ইসলাম, যুব নেতা আতিকুর রহমান, ছাত্র নেতা শেখ ফজলুল করীম মারুফ প্রমুখ।

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় দলের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, দেশের মানুষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, পরিবর্তন চায় কিন্তু বর্তমান সরকার নীল নকশার নির্বাচনের পায়তারা করছে।

ইভিএমকে ইলেক্টনিক বাটপারি মেশিন উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, বর্তমান সিইসি মেরুদণ্ডহীন সিইসি। এই সিইসির নেতৃত্বাধীন কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

ভারতের বিজেপি নেতা সুব্রানিয়াম স্বামীর বাংলাদেশ দখলের প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পাশ্ববর্তী দেশের একজন সংসদ বাংলাদেশ দখলের হুমকি দেয় অথচ দেশের সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ জানানো হয় না। এমন নাতজানু সরকারের হাতে দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বিএনপির পক্ষ থেকেও এর কোনো প্রতিবাদ না করায় তিনি বিএনপিকেও ছাড় দেননি। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এক বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কোনো শয়তানকে শয়তানি করার জন্য দেশের জনগণ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নিবে না।

অন্যান্যের মধে আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আহমদ আব্দল কাইয়ুম, মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, মুফতি দেলোয়ার সাকী, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মাওলানা নেছার উদ্দিন, ছাত্র নেতা, শেখ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, এম হাসিবুল ইসলামসহ ছাত্র, যুব, শ্রমিক আন্দোলনসহ দলের অন্যান্য অঙ্গসঙ্গনের নেতৃবন্দ।

সমাবেশ শেষে দাবি আদায়ে ঢাকা সহ জেলায় জেলায় বিক্ষোভ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি এবং রাষ্ট্রপ্রতি বরাবর স্মারকলিপিসহ তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

/আরএ

Comments